নিজস্ব প্রতিবেদক : ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে আগামিকাল ২৯ মে টেকনাফ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন। তাঁরা হলেন নুরুল আলম (টেলিফোন), জাফর আহমদ ( আনারস) ও জাফরের ছেলে দিদার মিয়া (মোটরসাইকেল)। শুরু থেকে দিদার মিয়া মাঠে নেই। বাবার পক্ষেই তিনি প্রচারণা চালাচ্ছেন।
নির্বাচন করছে জাফর আহমদ, আর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন বদি। জাফর আহমদকে জেতাতে শুরু থেকে সমগ্র টেকনাফ জুড়ে ভোটারদের নিকট নানান প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেড়াচ্ছেন কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি। জাফরকে জিতাতে যেন তার ঘুম হারাম।তার পক্ষে বদি সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছেন।
জাফর আহমদকে সহজে জিতিয়ে আনা বদির জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাফর আহমদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা একটি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করায় বেকায়দায় পড়েছেন বদি। জনপ্রতিনিধি থাকার সময় কোটি টাকার মালিক হন টেকনাফের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদের।
জাফর আহমদের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদক কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, জাফর আহমদ জনপ্রতিনিধি থাকার সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৪ কোটি ৯০ লাখ ৬৯ হাজার টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেন। তাঁর ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৫৩ হাজার টাকার মোট সম্পদের তথ্য পায় দুদক। এর মধ্যে পারিবারিক ও অন্যান্য খরচ বাবদ ব্যয় করেন ৫৪ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। দুদক মোট গ্রহণযোগ্য আয় পায় ২ কোটি ৪৭ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া যায় ৪ কোটি ৯০ লাখ ৬৯ হাজার টাকার। এ সম্পদগুলোর মধ্যে টেকনাফে জমি ও ব্যাংক হিসাবে টাকা রয়েছে জাফরের। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি। ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মে পর্যন্ত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
দুদক সুত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৫ জুলাই জাফর আহমদকে সম্পদ বিবরণী জমা দিতে নোটিশ দেয় দুদক। ওই বছরের ৩০ জুলাই তিনি সম্পদ বিবরণী জমা দেন দুদক কার্যালয়ে। পরে দুদক যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিকভাবে জাফরের ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৬০ হাজার টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পায়। এই ঘটনায় ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল দুদক চট্টগ্রামের তৎকালীন উপসহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে নগরের ডবলমুরিং থানায় মামলা করেন। এতে জাফর আহমদকে আসামি করা হয়। এই মামলায় ২০২১ সালের জানুয়ারিতে চট্টগ্রাম আদালতে আত্মসমর্পণ করে কারাগারে যান তিনি। পরে জামিনে মুক্তি পান। পরে মামলার তদন্তে বেরিয়ে আসে আরও অবৈধ সম্পদের তথ্য।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নুরুল আলম ও তাঁর অনুসারী দলের নেতারা নির্বাচনের প্রচারনায় ও বিভিন্ন পথসভায় জাফরকে ইয়াবা কারবারি ও কালোটাকার মালিক বলছেন। সেই সাথে বদিকে ইয়াবার গডফাদার হিসেবে আখ্যা দিয়ে বর্জনের দাবি জানাচ্ছেন।
একটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত টেকনাফ উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৮০ হাজার ৪২০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৯১ হাজার ৮৮০ এবং নারী ৮৮ হাজার ৫৩৮ ভোট। ভোটকেন্দ্র ৬০টি।
চাটগাঁ নিউজ/এআইকে/এসআইএস