দাফনের ২১ দিন পর কবর থেকে মাদ্রাসা ছাত্রের মরদেহ উত্তোলন

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় দাফনের ২১ দিন পর কবর থেকে এক মাদ্রাসা ছাত্রের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। নিহত ছাত্রের বাবা মাঈনুদ্দীন আজাদের দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য এই আদেশ দেন।

সোমবার (১৪ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে উপজেলা সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সোয়ারী বর জামে মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থান থেকে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়।

ওই সময় লোহাগাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুন লায়েল, লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চুনতি পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মো. আব্বাস উদ্দীন উপস্থিত ছিলেন।

নিহত তাসনিমুল হাসান সাজিদ (১৫) উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের সামসুদ্দিন মাস্টার বাড়ির মাঈনুদ্দীন আজাদের ছেলে। সে হাফেজে কোরআন এবং আধুনগর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল।

জানা যায়, গত ২৪ জুলাই বিকেলে তাসনিমুল হাসান সাজিদ প্রতিদিনের ন্যায় সদর উপজেলার সাতগড়িয়া পাড়ার শরীয়ত উল্লাহ জামে মসজিদ সংলগ্ন একটি কক্ষে মোয়াজ্জিন নাছির উদ্দিনের কাছে পড়তে যায়। বিকেল সাড়ে ৪টায় সাজিদের মা তসলিমা আক্তারকে শিক্ষক নাছির উদ্দিন ফোনে জানান, তার ছেলে সাজিদ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পাশের পরিত্যক্ত জমিতে মারা গেছে।

এ ব্যাপারে সাজিদের পিতা মাঈনুদ্দীন আজাদের অভিযোগ মতে আসামিরা সাজিদ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে প্রচার করে তাড়াহুড়ো করে লাশ দাফন করে ফেলে। শিশুটির মৃত্যুর খবর পেয়ে শিক্ষক নাছির উদ্দিন পালিয়ে যান। পরবর্তীতে বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারেন শিশুটির শরীরে কোনও বিদ্যুৎস্পৃষ্টের চিহ্ন ছিল না।

শিক্ষক নাছির উদ্দিন বলাৎকারের পর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে সাজিদকে হত্যা করেছে বলেও অভিযোগ করে তার পিতা।

এই ঘটনায় ৭ দিন পর, গত ১ জুলাই (মঙ্গলবার) শিশুর পিতা মাঈনুদ্দীন আজাদ বাদী হয়ে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলাটি এজাহার (এফআইআর) হিসেবে নথিভুক্ত করার জন্য লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশনা প্রদান করেন।

গত ৮ জুলাই বাদীর আবেদনের পর আদালত লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য নির্দেশ দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।

লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান বলেন, আদালতের নির্দেশে লোহাগাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে শিশুর লাশটি উত্তোলন করা হয়েছে। আদালতের দায়ের করা মামলায় শিশুটির আরবি শিক্ষক ও স্থানীয় একটি জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন নাছির উদ্দিন (৩৭) ও নানা আবুল হোসেনকে (৫৫) আসামি করা হয়েছে। শিশুটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর আসল রহস্য পাওয়া যাবে।

চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন/এসএ

Scroll to Top