নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউটে সন্তান ও অভিভাবক ফোরাম আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ স্মৃতি সম্মাননা ও আহতদের সংবর্ধনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে হট্টগোলের ঘটনায় জনমনে সৃষ্ট বিভ্রান্তি দূর করতে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন মুখ খুলেছেন।
এ নিয়ে আজ সোমবার (১২ মে) তিনি ব্যক্তিগত ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন। ভিডি বার্তায় তিনি বলেন, ১১ মে চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউটে সন্তান ও অভিভাবক ফোরাম আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ স্মৃতি সম্মাননা ও আহতদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ছাত্রদলের এক নেতা তার বক্তব্যে জুলাই আন্দোলনে ছাত্রদলের ত্যাগ ও অংশগ্রহণ নিয়ে বলতে চেয়েছে। তার বক্তব্যে শহীদ ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরামের আত্মত্যাগ ও ছাত্রদলের ত্যাগ তিতিক্ষার কথা তুলে ধরতে চেয়েছিল। তাছাড়া আয়োজক কমিটি প্রকাশিত ম্যাগাজিনে ভুলবশত দুয়েকজন শহীদের নাম বাদ পড়েছে। এ নিয়ে অনুষ্ঠান স্থলে ৮/১০ জন ছেলে প্রতিবাদ করেছে। তাদের প্রতিবাদে অনুষ্ঠানস্থলে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা নিয়ন্ত্রণ করা আয়োজকপক্ষের ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। একপর্যায়ে তারা আমাকে মঞ্চে উঠে মাইকে দাঁড়িয়ে একটু সবাইকে শান্ত করানোর জন্য আহ্বান জানাানোর অনুরোধ করেন। তাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে আমি প্রতিবাদকারীদের উদ্দেশ্যে করে বলি যে, ম্যাগাজিনে বাদ পড়া শহীদদের নাম সংযোজন করে আবার তা রিরাইট করার জন্য আমি আয়োজকদেরকে বলব। প্রয়োজন আবার নতুন করে বই ছাপানো হবে। এতে হৈ চৈ করার কিছু নেই। ভুল হতেই পারে। ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। ছাত্রদল নেতার বক্তব্য যাদের ভাল লাগে নি। তাদের কাছে প্রয়োজনে ওই বক্তা ক্ষমা চেয়ে নিবে। ওই ছেলে কিন্তু ক্ষমাও চেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অনুষ্ঠানে যেহেতু অনেক গুণী জ্ঞানী ব্যক্তি উপস্থিত। তাই আমি অভিভাবক হিসেবে তাদেরকে একটু উচ্চ ভাষায় শান্ত হওয়ার জন্য বলেছি। এটা আমি তাদের অভিভাবক হিসেবে বলতেই পারি। আমি আবার অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ছেলেটিকে চেকআপ করে পরবর্তীতে নিজের প্রটোকল গাড়িতে করে নিয়ে গিয়ে হসপিটালাইজড করেছি। তাছাড়া তাকে কেউ আঘাত করেছে বলে অভিযোগ করেছিল, তাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু বিচার করা হবে। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলেছি। কাউকে ছাড় দেয়ার জন্য আমরা এ শহরে দায়িত্ব পালন করছি না।
মেয়র অভিযোগের সুরে বলেন, কিন্তু এ ঘটনাকে কয়েকটি মিডিয়া উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য অন্যভাবে প্রচার করেছে। সামান্য ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও দিয়ে এসব মিডিয়া যে ঘটনাটিকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়েছে এটি হচ্ছে হলুদ সাংবাদিকতা। এ ইয়েলো জার্নালিজমের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সোচ্চার হতে হবে। একজন মেয়র হিসেবে এ ধরণের হলুদ সাংবাদিকতাকে আমরা কেউ ছাড় দেব না। তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা জরুরি। আমি এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জানিয়েছি। তাদেরকে চিহ্নিত করা হবে। এ ঘটনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই দেখেছে। মিডিয়ার কল্যাণে সবাই দেখেছে। মিডিয়াগুলো পুরো ঘটনার ভিডিও প্রচার না করে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ভিডিও দিয়ে নিউজ বানিয়ে পুরো জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। এসব ইয়েলো জার্নালিষ্টদের বিরুদ্ধে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জুলাই আন্দোলনে দলমত সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে পথে নেমেছে। নিজেদেরকে নিবেদন করেছে। সবার সম্মিলিত আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি/এসএ