সিপ্লাস ডেস্ক: তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪ হাজার ১৭৯ জনে দাঁড়িয়েছে। উভয় দেশের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন।
তুরস্কের জরুরি সমন্বয় কেন্দ্র সাকোম জানিয়েছে, তুরস্কে নিহতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৬০৫ জনে পৌঁছেছে। অন্যদিকে সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ৫৭৪ জনে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অংশে নিহত হয়েছে ৩ হাজার ১৬০ জন। আর সরকার নিয়ন্ত্রিত অংশে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৪১৪ জনের।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে গুঁড়িয়ে যায় দুই দেশের হাজার হাজার হাসপাতাল, স্কুল ও অ্যাপার্টমেন্ট ভবন। এতে গৃহহীন হয়ে পড়ে দেশ দুটির লাখ লাখ মানুষ। উদ্ভূত ঘটনার প্রেক্ষাপটে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ১০ প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন।
এদিকে সপ্তম দিনের উদ্ধার অভিযানেও ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে প্রাণের সন্ধান মিলছে। উদ্ধারকারীরা বলছেন, যত সময় গড়াচ্ছে, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা ততই ক্ষীণ হয়ে আসছে।
সিএনএন জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ১৪৭ ঘণ্টা পরেও ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে ১০ বছর বয়সী এক মেয়েকে উদ্ধার করেছে তুরস্কের উদ্ধারকারী দল। তবে ‘নিরাপত্তা হুমকির’ কারণ দেখিয়ে ইসরায়েল থেকে আসা উদ্ধারকারী দল ইউনাইটেড হাটজালাহ ছয় দিন পর তুরস্ক ছেড়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
তুরস্ক থেকে আরও তিনটি উদ্ধারকারী দল বিবিসিকে বলেছে, দক্ষিণ তুরস্কে লুটপাট ও সংঘর্ষের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। জার্মানি থেকে আসা উদ্ধারকারী দল ও অস্ট্রিয়ার সেনাবাহিনী গত শনিবার তাদের উদ্ধার অভিযান স্থগিত করেছে। তারা বলেছে, এখানে স্থানীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। তবে গোষ্ঠীগুলোর নাম উল্লেখ করেনি তারা।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, লুটপাটের অভিযোগে গতকাল অন্তত ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকটি বন্দুকও জব্দ করেছে পুলিশ।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, তিনি প্রয়োজনে আইন ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করবেন। যারা লুটপাটের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হোয়াইট হেলমেট। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে চলা গৃহযুদ্ধের কারণে ত্রাণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।