নিজস্ব প্রতিবেদক: লাল পতাকা ও সিগন্যাল অমান্য করে কালুরঘাট ব্রীজ পার হওয়া পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। যেখানে লোকোমাস্টারের অবহেলাকে দায়ী করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) চট্টগ্রামের বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপকের কাছে প্রতিবেদনটি জমা দেন ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে— চালক ও সহকারী চালক সেতুতে ওঠার আগে ট্রেন থামানোর বাধ্যতামূলক ‘ডেড স্টপ’ অমান্য করেছেন। ওই অংশে সর্বোচ্চ গতিবেগ ১০ কিলোমিটার হলেও তারা কয়েকগুণ বেশি গতিতে ট্রেন চালিয়েছেন। এমনকি লাল পতাকা সংকেতও তারা মানেননি। লোকোমাস্টার গোলাম রসুল ও সহকারী লোকোমাস্টার মো. আমিন উল্লাহর অবহেলা ও একাধিক নিয়ম লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া যাওয়ায় কমিটি তাদের শাস্তির সুপারিশ করেছে।
এদিকে, দুর্ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত কমিটির এমন প্রতিবেদন দাখিলের খবর শুনে দায়ী চালকের কঠিন শাস্তি দাবি করেছেন বোয়ালখালীবাসীসহ সেতু ব্যবহারকারী জনসাধারণ।
নিয়মিত কালুরঘাট সেতু পার হওয়া বোয়ালখালীর ফোরকান রাসেল বলেন, এই সেতুতে চালকরা প্রায় লাল পতাকা অমান্য করে ব্রীজ পার হয়ে যায়। এ অবহেলা ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ তারা দীর্ঘদিন ধরে করে গেলেও রেলওয়ের কারো মাথা ব্যথা ছিল না। এবার কিছুটা যেহেতু বোধদয় হয়েছে তাদের, আশা করছি কাগজে কলমে শাস্তি সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্তবে প্রয়োগ হবে।
এ নিয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে উক্ত দুর্ঘটনায় নিহত শিশু আয়েশার বাবা সাজ্জাদুন নূর শোকরিয়া জ্ঞাপন করে চাটগাঁ নিউজকে বলেন, চালকের এমন অবহেলার কারণে আমি আজ আমার বুকের ধনকে হারিয়েছি। আমার মত আর কারো বুক যাতে খালি না হয় সরকারকে কঠিন ব্যবস্থা নিতে হবে। দোষী চালক ও সহকারী চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই আমি। এ শাস্তি না হলে তারা সতর্ক হবে না। ফলে তারা একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে।
গত ৫ জুন রাতে লাল পতাকা ও সিগন্যাল অমান্য করে পর্যটক এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটি কালুরঘাট ব্রীজ পার হওয়ার সময় সিএনজি টেক্সি,মোটরসাইকেল,পিকআপসহ পাঁচটি যানবাহনকে ধাক্কা দেয়। এতে সিএনজি টেক্সিতে মা-বাবার কোলে থাকা শিশু মেহেরিমা নূর আয়েশা ও অটোরিকশাচালক তৌহিদুল ইসলাম (২৯) নিহত হন। আহত হন আরো অন্তত ১৬ জন।
পরের দিন ৬ জুন রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে রেলওয়ে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক এ বি এম কামরুজ্জামান বলেন, লোকোমাস্টারের অবহেলার কারণে কালুরঘাটে ট্রেন দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কমিটি কিছু সুপারিশও দিয়েছেন। সুপারিশগুলো বিবেচনা এ ধরণের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে দ্রুত করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি/জেএইচ