ঢাকা ও চট্টগ্রামে আরও ৫টি অর্থঋণ আদালত হচ্ছে

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : ব্যাংক ও অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ আদায়ে ঢাকায় তিনটি ও চট্টগ্রামে দুটি  আদালত গঠন করতে যাচ্ছে সরকার।

আইন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে এসব আদালত গঠনের বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রতিটি আদালতের জন্য একজন করে যুগ্ম জেলা জজ ও পাঁচজন সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মোট ৩০টি পদ অনুমোদন করা হয়েছে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘খেলাপি ঋণের লাগাম টানতে অর্থঋণ আদালতে বিচারাধীন মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সরকার তৎপর। এ লক্ষ্যে ঢাকায় চারটি অর্থঋণ আদালতের পাশাপাশি আরও তিনটি আদালত প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ ছাড়া চট্টগ্রামে বিদ্যমান আদালতের পাশাপাশি আরও দুটি অর্থঋণ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রয়োজনে আদালতের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।’

দেশে বিচারাধীন অর্থঋণ মামলার তুলনায় আদালতের সংখ্যা কম। এ কারণে বিপুল পরিমাণ ঋণখেলাপি হয়ে আছে। নানা কারণে ঋণ আদায়েও বিলম্ব হচ্ছে। এ জন্য গত বছর ঢাকায় ১৩টি ও চট্টগ্রামে চারটি নতুন অর্থঋণ আদালত গঠনে ১০২টি পদ সৃজনের জন্য আইন মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। ওই প্রস্তাব পর্যালোচনা শেষে সম্প্রতি পাঁচটি নতুন অর্থঋণ আদালত গঠনের বিষয়ে ৩০টি পদ সৃজন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে ফাইল পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন শেষে ফাইলটি সচিব কমিটিতে পাঠানো হবে। সেখানে অনুমোদনের পর ফাইলটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে (সারসংক্ষেপ) অনুমোদনের জন্য যাবে। এরপর অর্থ মন্ত্রণালয় ৩০টি পদের বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পৃষ্ঠা অঙ্কন করবে। পরে সরকারি আদেশ (জিও) জারি করা হবে।

সুপ্রিম কোর্টের তথ্যানুসারে, বর্তমানে আট বিভাগীয় শহরের মধ্যে ঢাকায় চারটি, চট্টগ্রামে একটি, খুলনায় একটি ও ময়মনসিংহে একটি অর্থঋণ আদালত রয়েছে। অন্য চারটি বিভাগীয় শহরে কোনো সুনির্দিষ্ট অর্থঋণ আদালত নেই। এসব বিভাগ ও জেলা শহরে বর্তমানে যুগ্ম জেলা জজ পদমর্যাদার বিচারক অর্থঋণ আইনে মামলা গ্রহণ ও বিচারের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থঋণ আদালতের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের অর্থঋণ আদালতগুলোয় খেলাপি ঋণের অভিযোগে ৭৬ হাজার মামলা বিচারাধীন। এসব মামলায় আটকে রয়েছে প্রায় ৮৫ হাজার ২১৬ কোটি টাকা। ২০০৩ সালে অর্থঋণ আদালত গঠনের পর থেকে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় আড়াই লাখ মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে পৌনে দুই লাখ মামলা।

ঋণ জালিয়াতিসহ অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাট থেকে দেশের ব্যাংক খাত রক্ষায় ১৯৯৮ সালে তিনটি সুপারিশ করেছিল বিশ্বব্যাংক। এতে কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক পদ্ধতি, দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং কার্যকর আদালত ব্যবস্থা গড়ে তোলার সুপারিশ করে বলা হয়েছিল, এগুলো না হলে আমানতের সুরক্ষা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে ঋণ বিতরণ সম্ভব হবে না।

চাটগাঁ নিউজ/এআইকে

Scroll to Top