সিপ্লাস ডেস্ক: শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে করা মামলায় তৃতীয় সাক্ষী মো. এনামুল হকের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। এ মামলার চতুর্থ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানার আদালতে মামলার তৃতীয় সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা শেষ হয়।
এ মামলায় ড. ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন ও ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ। অপরদিকে, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী।
তৃতীয় সাক্ষী এনামুল হককে জেরার বিষয়ে ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ তিন নম্বর সাক্ষী জেরায় বলেছেন— তিনি ঘটনাস্থলে যে জায়গাটায় গিয়েছেন সেটা চেনেন না। ব্যারিস্টার মামুন আরও বলেন, এ মামলার বাদীর সঙ্গে আরও চারজন সাক্ষী দিয়ে টেম্পারিং করে করা হয়েছে। তাই তাদের হায়ার করে সাক্ষী আনা হয়েছে। তাই হায়ার করা সাক্ষী এটা জেরায় প্রমাণিত হয়েছে। এ সাক্ষী কোনো কিছু বলতে পানেনি। একপর্যায়ে তিনি স্বীকারও করলেন যে উনি ঘটনাস্থলে যাননি এবং ঘটনাস্থল তিনি চিনেন না।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বলেন, তৃতীয় সাক্ষী ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে গিয়েছেন। তিনি পরিদর্শন টিমের একজন মেম্বার ছিলেন। তিনি টিমস লিডার নন। তিনি সত্য কথাটাই বলেছেন। একজন সহজসরল শ্রম অধিদপ্তরের শ্রম কর্মকর্তা যেভাবে সাক্ষী দেওয়ার সেভাবেই সাক্ষ্য দিয়েছেন। জবানবন্দিতে উনি যদি কোনো তারিখ যথাযথভাবে বলতে না পারেন। স্বাভাবিকভাবে আপনারা জানেন ফৌদারি মামলায় যখন জেরা করা হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা চেষ্টা করেন যে উনাকে কিছুটা কনফিউজড করার জন্য। কিন্তু উনি কনফিউজড হননি এবং তিনি কোনো কনটারডিকটরি স্টেটমেন্ট দেননি। সে জেটা জানেন সেটার উত্তর দিয়েছেন এবং ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
এর আগে গত ১৮ অক্টোবর এ মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী হাদিউজ্জামানের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। তারও আগে গত ১১ অক্টোবর মামলার বাদী শ্রম পরিদর্শক তরিকুল ইসলামকে আসামিপক্ষের জেরা শেষ হয়। এরআগে গত ২২ আগস্ট এ সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করার পর তাকে জেরা করেন ড. ইউনূসের আইনজীবীরা। এরপর গত ৫, ১৩, ২০ ও ২৭ সেপ্টেম্বর, ৩ ও ১১ অক্টোবর সাক্ষীকে জেরা করেন ড. ইউনূসের আইনজীবী।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে ওই মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
এ মামলায় ড. ইউনূস ছাড়াও গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানকে বিবাদী করা হয়েছে।