চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন করতে হবে বলে মত দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, এটি বিএনপির একক কোনো দাবি নয়, দেশের ৯০ শতাংশের বেশি রাজনৈতিক দল এই সময়ের মধ্যেই নির্বাচনের পক্ষে।
আজ রোববার (৮ জুন) দুপুরে চট্টগ্রামের বাসভবনে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এসব কথা জানান।
এপ্রিলে নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন— ডিসেম্বরে নির্বাচন-এটি বিএনপির একার কোনো দাবি না। আমার হিসেবে ৯০ শতাংশ রাজনৈতিক দলের বেশি রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনের কথা বলেছে ডিসেম্বরে। এটি বলার পেছনে কতগুলো যৌক্তিক কারণ আছে। যেমন, আমাদের সংস্কার কার্যক্রমগুলো প্রায় শেষের দিকে। সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি বিবেচনায় ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা পুরোপুরি যৌক্তিক বলে মনে করেন তিনি।
বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এরপরে আসে বিচারের কথা। বিচার করবে বিচার বিভাগ, বিচার করবে আদালত, বিচার তো সরকার করে না। সরকারের কাজ হচ্ছে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা। সুতরাং এর মধ্যে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। যারা বাকি আছে, তাদেরকে আরও ছয় মাসের মধ্যে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হোক। আর যাদেরকে পারবে না, বিএনপি নিশ্চিতভাবে তাদেরকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা তো বিচার করব, সেখানে কোনো সমস্যা নেই। তাহলে ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন কেন যাবে, কোন যুক্তিতে যাবে? এটি একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার্থে করা হয়েছে-সেই প্রশ্ন এখন জেগেছে। যদি সে ক্ষুদ্র অংশের স্বার্থ রক্ষার জন্য নির্বাচনকে পেছানো হয়, তাহলে সেই ক্ষুদ্র অংশের স্বার্থ রক্ষার জন্য আগামী দিনে এদের অধীনে যে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, সেটা তো এখন সন্দেহের উদ্রেক সৃষ্টি করেছে। সুতরাং ডিসেম্বরের মধ্যে আমাদের নির্বাচন করতে হবে এটাই আমাদের অবস্থান।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ডিসেম্বরের পরে আসবে রমজান। রমজান মাস কিন্তু আমাদের ত্যাগের মাস, সংযমের মাস। ওই মাসে তো আমরা আমাদের নির্বাচনের কর্মকাণ্ড করতে পারবো না। এবং কেউ যদি সেটা মনে করে, এটা আমাদের অনুভূতির ওপর আঘাত করা হবে। এরপরে আসবে পরীক্ষা, তারপর আবহাওয়া জনিত সমস্যা-ঘূর্ণিঝড়, এ মাসগুলোতে হয়ে থাকে। আর রোদ, গরম তো আছেই।
সুতরাং সেদিকে যারা নিয়ে যাচ্ছে, মনে হয় না এখানে কোনো সৎ উদ্দেশ্য আছে। এটা প্রশ্নবিদ্ধ একটা বিষয়। আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে সবাই নির্বাচন চাই। আমরা সেই দিকে যেতে চাই।
আমীর খসরু বলেন, গত ১৫ বছর বিএনপি নেতাকর্মীরা যে ত্যাগ শিকার করেছে, এ দেশের কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের তা করতে হয়নি। এই যে নেতাকর্মীরা ত্যাগ করতে শিখেছে, এটি দলের সবচেয়ে বড় শক্তি। আমরা আত্মবিশ্বাসী-আগামী দিনের বিএনপি আরও শক্তিশালী হবে।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন— পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করতে হবে, জনগণের সঙ্গে মিশতে হবে, জনগণের কথা বুঝতে হবে। কোনো ধরনের উচ্ছৃঙ্খলতার রাজনীতি চাই না, সাংঘর্ষিক রাজনীতি তাই না, আমরা সহনশীল রাজনীতি চাই। আমরা যদি অন্যের মতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করি, তার মতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমরা একটি সংস্কৃতি চালু করতে চাই। দুনিয়ার সংস্কার করে কোনো লাভ হবে না, যদি রাজনৈতিক সংস্কৃতি বদলাতে না পারি।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ