আনোয়ারা প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম আনোয়ারার রাঙ্গাদিয়ায় অবস্থিত ডিএপি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (ডিএপিএফসিএল) সার কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানি পান করে ৩ টি মহিষের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেন ডিএপিসিএল কর্তৃপক্ষ।
রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় গোবাদিয়া খালে সার কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যের পানি খেয়ে তিনটি মহিষের মৃত্যু হয়েছে ও অসুস্থ আরো দুইটি। তবে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় নিখোঁজ রয়েছে আরো পাঁচটির বেশি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডিএপিএফসিএলের নির্গত গ্যাসের পানি বারশত ইউনিয়নের গোবাদিয়া খাল দিয়ে চলাচল করে থাকে। খালের আশপাশে খোলা মাঠে স্থানীয়দের গরু-ছাগল ও মহিষ বিচরণ করে থাকে। রবিবার বিকালে কোনো ধরনের মাইকিং ছাড়াই কারখানার বিষাক্ত পানি ছেড়ে দিলে স্থানীয় রফিকের তিনটি গবাদি মহিষ মারা যায়। এছাড়া খোলা মাঠে ছড়তে থাকা অনেক গরু মহিষ পানি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে৷ সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় আরো পাঁচটি মহিষ খোঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানান খামারিরা।
এসব মহিষের মৃত্যুর ঘটনা প্রতি বছরে ঘটে। কোনো ধরনের মাইকিং ছাড়া সিইউএফএল সার কারখানা ও ডিএপি সার কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানি ছেড়ে দেওয়া হয় খালে। আর এসব পানি খেয়ে কয়েক বছরে অর্ধশতাধিক গরু মহিষ মারা যায়। ঘটনার পরে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলেও ঘোষণা ছাড়া বিষাক্ত পানি ছেড়ে দেওয়ার ঘটনার স্থায়ী সমাধান মিলেনি।
ক্ষতিগ্রস্ত খামারি মোঃ রফিক বলেন, ডিএপিএফসিএল কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের কোনো ধরনের অবগত না করে বিষাক্ত পানি-বর্জ্য ছেড়ে দেওয়াতেই আমার তিনটি মহিষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরো দুইটি। খোঁজে পাওয়া যায়নি আরো পাঁচটি মহিষ। আমি পুরো নিঃস্ব হয়ে গেছি। এসব গরু মহিষ পালন করে সংসার চালাতে হয় আমার। তাই প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় আরেক খামারি মোঃ ফারুক বলেন, সার কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানি খেয়ে আমার একটি গরু অসুস্থ হয়েছে। এটির বাঁচার সম্ভাবনা কম। এছাড়া আরো অনেকের গরু মহিষ অসুস্থ হয়েছে। মারা গিয়েছে তিনটি। আরো মারা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জানতে চাইলে ডিএপি সার কারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল বলেন, আমাদের কারখানা থেকে কোন বিষাক্ত বর্জ্য ছাড়া হয়নি। এছাড়াও কারখানা থেকে বের হওয়া পানিতে এমোনিয়া না থাকায় কোন পশুর মৃত্যুর সম্ভাবনা নেই। তবে মহিষ গুলোর পোস্টমর্টেম শেষে জানা যাবে কিভাবে মহিষগুলো মারা গিয়েছে। এর আগের বছরও কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানি খেয়ে গরু-মহিষ মারা যাওয়ার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।
চাটগাঁ নিউজ/সাজ্জাদ/এমকেএন