ডাক্তার শ্বশুর-শাশুড়িও যৌতুক চান, আদালতে গৃহবধুর মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : যৌতুকের দাবিতে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সকালে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরার আদালতে ফৌজদারি এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।

আসামিরা হলেন—ওই গৃহবধূর স্বামী ফাহিম আহমদ (২৪), শাশুড়ি ডা. শামীমা আক্তার (৫০) এবং শ্বশুর ডা. আশফাক আহমদ (৬৫)। তারা সবাই নগরের পাঁচলাইশ থানার পাঁচলাইশ হাউজিং সোসাইটির স্যানমার নোবেলা হাসিন ভবনের বাসিন্দা।

মামলার আবেদনে ওই গৃহবধূ অভিযোগ করেন- তিনি আল হিয়াদাহ্ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়াশোনা করেন। এ লেভেল অধ্যয়ন শেষে তিনি ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির ২০২৪ সনের জুন-জুলাই সেশনে ভর্তি হন। পড়াশোনার পাশাপাশি আসামিদের বাসার উপরের ফ্ল্যাটের বাসিন্দার এক শিশুকে পড়াতেন।টিউশনিতে আসার সময় আসামিরা তাকে দেখে পছন্দ করে। পরে খোঁজখবর নিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবের সময় আসামিরা বলেন, তাদের কোনো দাবি-দাওয়া নেই এবং স্বর্ণালংকার ও ফার্নিচার কিছুই লাগবে না।

গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর ১৫ লাখ টাকা দেনমোহরে তার সঙ্গে আসামি ফাহিম আহমদের বিয়ে হয়। কিছুদিন পর বাদী জানতে পারেন, স্বামী অলস এবং বেকার।

এদিকে, তার শ্বশুর-শাশুড়িকে ‘খুশি করার জন্য’ ১০ ভরি স্বর্ণ ও সেগুন কাঠের ফার্নিচার দাবি করতে থাকেন স্বামী। আর দাবি না মানায় ওই গৃহবধূ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। একপর্যায়ে তার পড়াশোনা বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত ১৭ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে ৫০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন তার স্বামী ফাহিম। একপর্যায়ে আসামিরা তাকে মারধর করেন। এতে আহত হলে অনুরোধ করা সত্ত্বেও কেউ হাসপাতালে নেননি। তিনি একাই রিকশাযোগে ন্যাশনাল হাসপাতালে গেলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে চিকিৎসা নেন।

এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ১১ (গ)/৩০ ধারা তৎসহ দণ্ডবিধির ৩১৩ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এক গৃহবধূ তার স্বামী, ও শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলার আবেদন গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট থানাকে তদন্ত করে রিপোর্ট ৭ দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

চাটগাঁ নিউজ/ইউডি/এসএ

Scroll to Top