আনোয়ারায় ডাকাতির মাছ সন্দেহে মাছভর্তি দুটি ট্রাক আটক

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: আনোয়ারা উপজেলায় ডাকাতির মাছ সন্দেহে দুই ট্রাক সামুদ্রিক মাছ নিয়ে যাওয়ার সময় ২টি ট্রাক আটক করে রাখা হয়েছে। আনোয়ারা মালিক সমিতির দাবি, তাদের বোট থেকে ডাকাতি হওয়া এসব মাছ শহরে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। অন্যদিকে মাছ নিয়ে শহরে যাওয়া কুতুবদিয়ার বোট মালিকের দাবি, মাছগুলো তাদের মাঝিমাল্লারা মেরেছে।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) পিএবি সড়কের আনোয়ারা মাজার গেইট এলাকায় দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মাছের ট্রাক দুটি আটকে রাখা হয়। পরে কোস্টগার্ড এসে মাছগুলো আড়তে জমা রাখে। সুরাহা সাপেক্ষে মাছগুলো প্রকৃত মালিকের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে তারা জানায়।

আনোয়ারা বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিছ জানান, বঙ্গোপসাগরে আমাদের ট্রলার ডাকাতি হওয়ার পর বিভিন্ন ঘাটে আমরা খবর লাগিয়েছি। পরে জানতে পারি আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাঁশখালী শেখেরখীল ঘাট থেকে আমাদের ট্রলার থেকে ডাকাতি হওয়া মাছগুলো দুটি ট্রাক করে শহরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

খবর পেয়ে ১২টার দিকে ট্রাক দুটিকে আমরা আটক করি। ট্রাকের সাথে থাকা লোকজন বলছেন তাদের দুই বোট থেকে দুই ট্রাকে করে মাছগুলো আনা হচ্ছে। অথচ এই মৌসুমে দুই বোটে ৯-১০ মণের চেয়ে বেশি মাছ পাওয়া অসম্ভব। কিন্তু ট্রাকে কমপক্ষে ৮০-৯০ মণ মাছ আছে যেগুলো আমাদের বোট থেকে ডাকাতি হয়েছে।

তবে ট্রাকের সাথে থাকা কুতুবদিয়ার বোট মালিক এমরান কোম্পানি ও এজহাব উদ্দিন বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করেন। তারা বলেন, আমাদের দুই বোট থেকে মাঝি মাল্লারা মাছ গুলো এনেছে। কতুবদিয়া ১ নম্বর ইউনিয়নের মেরা কাটা ঘাট (উত্তরের ঘাট) থেকে এসব মাছ বিক্রি করতে চট্টগ্রাম শহরে যাচ্ছি। পথিমধ্যে আনোয়ারার বোট মালিকের আমাদের আটকায়। এই দুই ট্রাকে ৭০-৮০ মন ইলিশ মাছ, লইট্টা মাছ, ও অন্যান্য সাগরের মাছ রয়েছে।

ট্রাকের সাথে থাকা চট্টগ্রামের মোহাম্মদ শফি আলম নামের এক মাছের সর্দার বলেন,  প্রতিবারই মাছের খবর দিলে আমি এমরান কোম্পানিদের মাছ আনতে যাই। কিছুদিন আগেও এনেছি তবে পরিমাণে কম। আজকেও মাছের খবর দেওয়ার পর আমি মাছ নিতে আসছিলাম।

ঘটনাস্থলে থাকা কোস্ট গার্ড সিসি নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি সমাধান হয়েছে। মাছের ট্রাকগুলোকে আড়তে রাখতে বলা হয়েছে। থানায় অভিযোগের মাধ্যমে মালিকানা নিশ্চিত করার পর মাছগুলোকে বিক্রি করতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত  ৫ অক্টোবর  উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের পূর্ব গহিরা শঙ্খ নদীর ফকিরহাট ঘাট থেকে ২০ থেকে ২৫ টি মাছ ধরার ট্রলার সাগরে যায়। প্রতিটি ট্রলারে ১২ জন করে মাঝি মাল্লা ছিল। পরে ৮ অক্টোবর দুপুরে ৩টি ট্রলারে করে ২০-২৫ জন জলদস্যু অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে তাদের ৬ টি ট্রলারকে ঘিরে ফেলে। এসময় জলদস্যুরা গুলি করতে করতে তাদের ট্রলারে উঠে পড়ে। একপর্যায়ে জলদস্যুরা মাঝি ও জেলেদের মারধর করে মালামাল, মাছ, তেল, টাকা পয়সা, মোবাইল সবকিছু ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন মাঝি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top