চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : সিরাজগঞ্জে পেঁয়াজের ট্রাক লুট এবং চালক ও হেলপারকে অপহরণ করে মারধরসহ চাঁদা দাবির মামলায় পুলিশের সাবেক দুই কর্মকর্তাসহ পাঁচজনকে দু’টি পৃথক ধারায় ২১ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া লুট হওয়া পেঁয়াজ কেনার দায়ে আড়তদারকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আড়তদার ছাড়া বাকি পাঁচ আসামি পলাতক ছিলেন।
তাদের অনুপস্থিতেই আজ বুধবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এম আলী আহামেদ এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক উপ-পরিদর্শক মাইনুল হাসান, সলঙ্গা থানার সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মতিউর রহমান খান, সলঙ্গা থানার পাটধারী গ্রামের শীতল প্রামাণিকের ছেলে রেজাউল করিম রনি, একই থানার হাসানপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে সবুজ আলী ও বাগুন্দা গ্রামের বাহাজ উদ্দিনের ছেলে আনিস ওরফে আনিস ড্রাইভার এবং সদর উপজেলার কান্দাপাড়ার নান্নু মন্ডলের ছেলে আড়তদার সাব্বির আলম সবুজ।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইন্দ্রজিত সাহা এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার রাশেদুল ইসলাম জানান, পুলিশ কর্মকর্তা মাইনুল হাসান, মতিউর রহমান, রেজাউল করিম রনি, সবুজ আলী ও আনিস ড্রাইভারকে পেনাল কোডের ৩৬৫ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে সাত বছর কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ২০ হাজার জরিমানা অনাদায়ে এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এছাড়া পেনাল কোডের ৩৯২ ধারায় একই আসামিদের ১৪ বছর কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে এক মাস বিনাশ্রম করাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আড়তদার সাব্বির আলম সবুজকে পেনাল কোডের ৪১১ ধারায় দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১০ জুলাই রাত ১০টার দিকে ২৫২ বস্তা ভারতীয় এলসির পেঁয়াজসহ একটি ট্রাক চাপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ বন্দর থেকে চট্রগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়। ১১ জুলাই দুপুরের দিকে ওই ট্রাকের চালক মোরশেদ আলী ট্রাক মালিক মুজিবুর রহমানকে ফোনে জানান, সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় সমবায় পেট্রোল পাম্পের কাছে হেলপারসহ তাকে আটক করেছে পুলিশ। একটি প্রাইভেটকারে তাদের তুলে সিরাজগঞ্জ শহরে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দারি করে তারা। পরবর্তীতে সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ট্রাকটি শিয়ালকোল বিসিক এলাকা থেকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ট্রাক মালিক রাজশাহীর গোদাগাড়ীর মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে সলঙ্গা থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের সময় আড়তদার সবুজ গ্রেপ্তার হলে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ বাকি আসামিদের নাম। তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণের জন্য মোট ১৫ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেন। সাক্ষ্য শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে এ রায় দেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি আব্দুর রহমান। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট বিমল কুমার দাস, ইন্দ্রজিত সাহা, আসিফ আজাদ, জামাল উদ্দিন ও কামরুল হুদা।
চাটগাঁ নিউজ/এসআইএস