নিজস্ব প্রতিবেদক : নগরের নিউ মার্কেট এলাকায় ফুটপাত জুড়ে গেঁড়ে বসা অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাঠ উচ্ছেদে ৩ দিন আগে তোড়জোড় করেই নেমেছিলো চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। তবে ঢোল পিটানো এই উচ্ছেদের ৭২ ঘন্টা না যেতেই ফের দখল হয়ে গেছে সড়ক-ফুটপাত। অনেকটা যেন যেই লাউ সেই কদু। নিউজটা যেদিন প্রচার হয়েছিলো সিপ্লাসের দর্শক ও পাঠকরা মন্তব্য কলামে লিখেছেন- এই অভিযান শেষ পর্যন্ত সফল হবে না!!
হকাররা বলছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত হকারদের পুর্নবাসন হবে না ততক্ষণ পর্যন্ত দখল পুরোপুরি রোধ করা যাবে না। আয়-উপার্জনের জন্য অল্প পুঁজিতে রাস্তাঘাটই বেছে নিয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। অভিযান চালিয়ে তাদের উচ্ছেদ করলেও ‘চোর-পুলিশ’ খেলে তারা ফের বসছেন। এটি একটি মূলত দীর্ঘদিনের সিন্ডিকেট। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চত্রছায়ায় গড়ে উঠা হকার সিন্ডিকেট ওয়ান ইলেভেনের মঈনউদ্দিন ফখরুদ্দিনের আমল ছাড়া কখনোই নানা অভিযানে বন্ধ করতে পারেনি কোন সরকার!-এমনটাই মন্তব্য ছিলো স্থানীয় দোকানদারদের। তবে নিম্ন আয়ের মানুষকে ঢাল বানিয়ে কেউ যাতে স্থায়ী স্থাপনা বানিয়ে চাঁদাবাজি করতে না পারে সে ব্যাপারে সজাগ রয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে নিউ মার্কেট, আমতল ও পুরাতন স্টেশন রোড গিয়ে দেখা যায়, উচ্ছেদ হওয়া ফুটপাত ও সড়কে আগের মতো অস্থায়ীভাবে দোকানপাট খুলে দখল করে নিয়েছে হকাররা। কেউ কেউ নতুনভাবে স্থাপনা তৈরি না করলেও চেয়ার টেবিল বসিয়ে ব্যবসা পেতেছেন। এক কথায়—ফুটপাতজুড়ে চলছে জমজমাট ব্যবসা। দেখে মনে হবে না কদিন আগে এখানে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চসিক মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাশেম চাটগাঁ নিউজকে বলেন, অভিযানের পর প্রতিদিন চসিকের একজন ম্যাজিস্ট্রেট স্বশরীরে গিয়ে নিউমার্কেট এলাকায় তদারকি করছেন। তবে ম্যাজিস্ট্রেট চলে যাওয়ার পর তারা দোকান বসাচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। তাদেরকে ধরতে শিগগিরই আমরা আবার অভিযান করবো। তখন যাকে পাবো তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি আরও জানান, নগরীর ফুটপাত দিয়ে জনগণের চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কঠোর হতে নির্দেশনা দিয়েছেন মেয়র মহোদয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হকার মালিক সমিতির সভাপতি মিরন হোসেন মিলন জানান, হকারদের পুনর্বাসন না হওয়া পর্যন্ত হকাররা আগের মতোই ফুটপাতে দোকান বসিয়ে ব্যবসা করে যাবে।
নগরীর নিউ মার্কেট এলাকার ফুটপাতে পথচারীদের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করতে গত ৮ ফেব্রুয়ারি চসিক ৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট ও ২০০ পুলিশ নিয়ে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে সব ধরণের অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করে পরিবেশ স্বাভাবিক করা হয়। এতে পথচারিরা স্বস্তি ফিরে পায়। কিন্তু উচ্ছেদের পর আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
সদরঘাট এলাকার বাসিন্দা আবদুল মোতালেব বলেন, কিছুদিন পর পর সিটি কর্পোরেশন উচ্ছেদ অভিযান করলেও তদারকির অভাবে সকালের উচ্ছেদ বিকেলে আবার দখল হয়ে যায়। ফলে এ ধরণের উচ্ছেদ বা অভিযান কোনো ফল দিচ্ছে না। যে লাউ সেই কদু। পথচারিদের হাঁটা চলার ভোগান্তি কমছে না।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ