টানেল জংশন উন্নয়নে সিডিএর ২৬০ কোটি টাকার প্রকল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক : পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায় সড়ক জংশন উন্নয়নে ২৬০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আউটার রিং রোড, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও কর্ণফুলী টানেল-বিমানবন্দরমুখী সড়কগুলোতে একমুখী ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু হবে। এর মধ্য দিয়ে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতসহ রিং রোড, এক্সপ্রেসওয়ে ও টানেল সংশ্লিষ্ট সড়কগুলোর যানজট নিরসনের পাশাপাশি নিয়ন্ত্রিত যান চলাচলে গতিশীলতা ফিরে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। চলতি বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে সিডিএ।

সিডিএ সূত্রে জানা গেছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেল ও আউটার রিং রোড- এ তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলেও এর সঠিক সুফল ভোগ করা যাচ্ছে না। এর কারণ হচ্ছে একদিকে পর্যটক ও যানবাহনের চাপে স্থবির থাকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকা। আবার সৈকত এলাকার এ পরিস্থিতির প্রভাব পড়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে। যে কারণে এক্সপ্রেসওয়েতে সৃষ্টি হয় যানজট।

অন্যদিকে আউটার রিং রোড ব্যবহারকারী যানবাহনের ক্ষেত্রেও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়। টানেল দিয়ে যাতায়াতকারী আনোয়ারা প্রান্তের যানবাহনের ক্ষেত্রেও সৃষ্টি হয় ট্রাফিক জটিলতা। সামগ্রিকভাবে জনসাধারণ ও যানবাহনের চাপে জংশন এলাকাটিতে বর্তমানে চরম ট্রাফিক ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।

এমন অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সিডিএ’র আউটার রিং রোড ডেভেলপমেন্টের আওতায় জংশন ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২০২৩ সালে এ প্রকল্পের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার স্বার্থে গৃহিত ২৬০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে সভাপতি করা হয়।

২০২৪ সালের জুন-জুলাইয়ে কাজ শুরুর কথা থাকলেও নানা প্রতিকূলতায় তা আর এগোয়নি। গত তিন-চার মাস আগে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়।

জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও বিমানবন্দরমুখী যানবাহনের জন্য অতিরিক্ত আরও দুটি লেন নির্মাণের কাজ চলছে। প্রকল্পে নৌ বাহিনীর পশ্চিম পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকায় একটি ইউ লুপ থাকবে। এ ইউলুপ ব্যবহার করে যানবাহনগুলো প্রয়োজনে কর্ণফুলী টানেলও ব্যবহার করতে পারবে। আবার আউটার রিং রোড হয়ে ফৌজদারহাট যাতায়াতে ওই একই পয়েন্ট থেকে একটি ওভারপাস হবে। প্রকল্পের আওতায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি ওভারপাস ও একটা আন্ডারপাস নির্মিত হবে। এ ওভারপাস ও আন্ডারপাস ব্যবহার করে টানেল থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে নগরে যাতায়াত করা যাবে। এই প্রকল্পের অধীনে ইপিজেডের সঙ্গে আউটার রিং রোডের সাথেও একটি সংযোগ সড়ক করা হবে।

এ প্রসঙ্গে সিডিএর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান চাটগাঁ নিউজকে বলেন, টানেল নির্মাণের আগে রিং রোড করা হয়। এক্সপ্রেসওয়ের কাজও আগে শুরু হয়ে যায়। টানেলের পতেঙ্গা প্রান্তে এক্সপ্রেসওয়ে, রিং রোড ও টানেলের গাড়ি সব এসে জড়ো হয় পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায়। এতে করে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে দুর্বিষহ ট্রাফিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। আমরা এখানে একমুখী ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু করব।

তিনি বলেন, ওভারপাস, আন্ডারপাস নির্মাণের মাধ্যমে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ হবে। তাছাড়া সৈকতে আসা পর্যটকদের যাতায়াতের সুবিধার্থে চার লেনের একটি সড়ক হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় সৈকত এলাকায় তিনটি ফুটওভার ব্রিজ ও দুটি পার্কিং স্পেস নির্মিত হচ্ছে। এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ করার টার্গেট রয়েছে।

উল্লেখ্য, পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত পয়েন্টে এসে যুক্ত হয়েছে একে একে তিনটি প্রকল্প। ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প, ৩ হাজার ৩২৪ কোটি টাকার আউটার রিং রোড এবং ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকার কর্ণফুলী টানেল প্রকল্প। তিন প্রকল্পের সুষ্ঠু ব্যবহার ও নিয়ন্ত্রিত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সিডিএ পতেঙ্গা সৈকত এলাকায় জংশন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

চাটগাঁ নিউজ/ইউডি/এসএ

Scroll to Top