জুলাইয়ে এলসি খোলা কমেছে

সিপ্লাস ডেস্ক: দেশের মধ্যে শুরু হওয়া ডলার সংকট এখনো কাটেনি। সহসা সংকট দূর হওয়ার লক্ষণও তৈরি হয়নি। অন্যদিকে ডলার সংকটের কারণে আমদানিতে কড়াকড়ি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিশেষ করে বিলাসবহুল ও অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির লাগাম টেনে ধরা হয়। আর এতেই কমে যায় এলসি খোলা। গত অর্থবছরের মতো ঋণপত্র বা এলসি খোলা কমেছে চলতি অর্থবছরের শুরুর মাসেও।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস অর্থাৎ জুলাইয়ে বিভিন্ন পণ্য আমদানির জন্য ৪৩৭ কোটি ২৪ লাখ ডলার বা ৪.৩৭ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়েছে, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ের (জুলাই) চেয়ে ৩১ দশমিক ১৯ শতাংশ কম। এলসি নিষ্পত্তি কমেছে ২০ দশমিক ১৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে ৭৪৯ কোটি ১৮ লাখ ডলার বা ৭.৪৯ বিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র বা এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই মাসে (জুলাই) ৫৯৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার বা ৫.৯৮ বিলিয়ন ডলারের এলসি নিষ্পত্তি হয়েছিল।

২০২২-২৩ অর্থবছর (জুলাই-জুন) বিভিন্ন পণ্য আমদানির জন্য ৭ হাজার ২১৯ কোটি ৮০ লাখ ডলারের বা ৭২.২০ বিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র বা এলসি খুলেছিলেন বাংলাদেশিরা। এটি ২০২১-২২ অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ২৬ শতাংশ কম।

ডলার বিক্রি আর আমদানির দায় মেটানোর কারণে কমতে থাকে দেশের রিজার্ভ। গতকাল বুধবার (২৩ আগস্ট) পর্যন্ত আইএমএফ’র হিসাব মতে, দেশের খরচ করার মতো রিজার্ভ রয়েছে ২৩ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৩১৬ কোটি ডলার। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব মতে রিজার্ভ রয়েছে ২৯ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৯৩২ কোটি ডলার। এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে রেকর্ড ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছিল রিজার্ভ। পরের বছর ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট রিজার্ভ ছিল ৩৯ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে ওই রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে।

রিজার্ভ থেকে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বিক্রি করা হয় ১১৪ কোটি ৭০ ডলার বা ১১৪৭ মিলিয়ন ডলার। আর অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টের প্রথম ২৩ দিনে বিক্রি করা হয় ৮১ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এর আগে সদ্য বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি হয়েছিল।

২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক নিট মুনাফা ১০ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। এর মধ্যে সরকারকে ঋণ দিয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা লাভ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া ডলার বিক্রি করে আয় মুনাফা করেছে ৬ হাজার কোটি টাকা। বাণিজ্যিক ব্যাংকে ঋণ দিয়ে আরও ২ হাজার কোটি টাকা আয় করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সব মিলে সদ্য বিদায়ী অর্থবছর ১৫ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যার মধ্যে খরচ করেছে ৪ হাজার ২৫২ কোটি টাকা। সেক্ষেত্রে নিট মুনাফা করেছে ১০ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা।

বিদায়ী অর্থবছর সরকার ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ২২ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা রেকর্ড ঋণ নিয়েছে। যার পুরো অংশই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেওয়া। এর আগের অর্থবছরে ৯৭ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকার ঋণ নেয় সরকার। এ দুই খাত থেকেই গত বছর বেশি আয় করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

Scroll to Top