সিপ্লাস ডেস্ক: ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থপরিপন্থি কার্যক্রম ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে গাজীপুরের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে ক্ষমা করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
শনিবার (২১ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ বিষয় জানানো হয়।
জাহাঙ্গীর আলম বরাবর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ‘শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন। উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বার্থ, আদর্শ, শৃঙ্খলা তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার জন্য ইতোপূর্বে আপনাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থপরিপন্থি কর্মকাণ্ড ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে ক্ষমাপ্রার্থীদের প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে। সেই সূত্রে আপনার প্রতিও ক্ষমা প্রদর্শন করা হলো। উল্লেখ্য, ভবিষ্যতে কোনো ধরনের সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে, তা ক্ষমার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।’
গেল মে মাসে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে নৌকার বিরোধিতা করে দলের গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করেন জাহাঙ্গীর আলম। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে দলের সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
দলীয় সূত্র বলছে, সামনে জাতীয় নির্বাচন ও বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলায় তাকে কাজে লাগাবে আওয়ামী লীগ। গাজীপুরে তার শক্ত ভিত আছে, আছে ডেডিকেটেড অনুসারী। তাই এ মুহূর্তে তাকে দলে প্রয়োজন। সম্প্রতি ঢাকায় আওয়ামী লীগের এক কর্মসূচিতে ৩০০ বাস নিয়ে তিনি যোগদান করেছিলেন।
এর আগে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গোপনে ধারণ করা মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও গাজীপুর জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠে।
২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ জাহাঙ্গীর আলমকে বহিষ্কার করে। পরে মেয়র পদ থেকেও বরখাস্ত হন তিনি।
এরপর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সই করা চিঠিতে জাহাঙ্গীর আলমকে ক্ষমা করার কথা জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে তাকে ক্ষমা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে, তা ক্ষমার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে বলেও চিঠিতে তাকে সতর্ক করা হয়েছে।
ক্ষমা ঘোষণা করে দেওয়া ওবায়দুল কাদেরের সই করা চিঠিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের স্বার্থ, আদর্শ, শৃঙ্খলা, তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থী সম্পৃক্ততার জন্য ইতিপূর্বে জাহাঙ্গীর আলমকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার/অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ স্বীকার করে তিনি ভবিষ্যতে এই ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত না হওয়ার বিষয়ে লিখিত অঙ্গীকার করেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দলের গত ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুসারে তাকে ক্ষমা করা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে তা ক্ষমার অযোগ্য বিবেচিত হবে।