জাতিসংঘ সম্মেলনে একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি পুনর্ব্যক্ত

সিপ্লাস ডেস্ক: জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের চলমান ৫৪তম অধিবেশনের সাইড ইভেন্টে বক্তারা সরকার, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকে ১৯৭১ সালে পাকিস্তান কর্তৃক সংঘটিত বাংলাদেশের গণহত্যাকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ ভবনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সহায়তা করেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন, সুইজারল্যান্ড এবং বাংলাদেশ সাপোর্ট গ্রুপ।

তাঁরা বলেছেন, নীরবতার অর্থই প্রশ্রয়। তাই প্রতিটি গণহত্যা, প্রতিটি যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ স্বীকৃতি, ভুক্তভোগী, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা ও সম্মান দেওয়া এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের পুনরাবৃত্তি বন্ধের পূর্বশর্ত। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নৈতিক দায়িত্ব ও ভূমিকা রয়েছে বলেও তাঁরা উল্লেখ করেন।

ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ ফোরাম এবং গ্লোবাল সলিডারিটি ফর পিস-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘ন্যায়বিচার এবং শান্তি: বাংলাদেশে গণহত্যা ১৯৭১’ শীর্ষক সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেনেভায় জাতিসংঘ অফিস ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ সফিউর রহমান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম গণহত্যা একটি ভয়াবহ অধ্যায়। এই গণহত্যার স্বীকৃতি এবং এর সাথে জড়িতদের বিচার আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের দাবি।”

সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডাচ পার্লামেন্টের প্রাক্তন প্রবীণ সদস্য এবং মানবাধিকার কর্মী হ্যারি ভ্যান বোমেল, ব্রিটিশ সাংবাদিক এবং ইইউ টুডে-এর প্রকাশক গ্যারি কার্টরাইট, নেদারল্যান্ডসের লাইডেন ইউনিভার্সিটির গভর্ন্যান্স অ্যান্ড গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স অনুষদের প্রভাষক এবং পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত গবেষক আলিনা খান, বন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও সিনিয়র সাংবাদিক ড. হোসাইন আবদুল হাই, বেলুচ ভয়েস অ্যাসোসিয়েশনের ফ্রান্স এর সভাপতি মুনির মেঙ্গল, ইউনাইটেড কাশ্মীর পিপলস ন্যাশনাল পার্টির নির্বাসিত চেয়ারম্যান সরদার শওকত আলী কাশ্মীরি, বেলজিয়ামস্থ গ্লোবাল সলিডারিটির সভাপতি মোর্শেদ মাহমুদ, ইউরোপীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মিয়া আবুল কালাম এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ, ঘাতক দালাল ণির্মূল কমিটির সভাপতি খলিলুর রহমান মামুন।

সম্মেলনে বক্তারা একমত হন যে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যা একটি বর্বরোচিত ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। এই অপরাধের স্বীকৃতি এবং এর সাথে জড়িতদের বিচার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নৈতিক দায়িত্ব।

সম্মেলনে বক্তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান যে, তারা যেন ১৯৭১ সালের গণহত্যার স্বীকৃতি দেয় এবং এর সাথে জড়িতদের বিচারের দাবিতে কাজ করে।

Scroll to Top