চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : কক্সবাজার সদরের ভারুয়াখালীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এক জামায়াত নেতার হামলায় গুরুতর আহত হন বিএনপি নেতা রহিম উদ্দিন সিকদার। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।
আজ মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকালে তার মৃত্যু হলে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা তৈরী হয়। কারণ হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় জামায়াত নেতা আব্দুল আল নোমানের বিরুদ্ধে। যদিও জামায়াত সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। জানা গেছে, রহিম সিকদার কক্সবাজার সদর উপজেলার আওতাধীন ভারুয়াখালী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন।
ভারুয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও নিহত রহিম উদ্দিন সিকদারের ভাই শফিকুর রহমান জানান, গত রবিবার রাতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তার ভাইদের মারধর করা হয়। হামলার পর মুমূর্ষু অবস্থায় আহতদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে রহিম সিকদারের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।সেখানেই আজ (মঙ্গলবার) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
তার মৃত্যুর পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কক্সবাজার জেলা যুবদলের সভাপতি এডভোকেট সৈয়দ আহমেদ উজ্জ্বল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন— ‘ফাতেরঘোনা ইউনিট জামায়াতে ইসলামী সভাপতির হাতে ভারুয়াখালী ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি রহিম উদ্দিন সিকদার নিহত হয়েছে’।
মূলত তার এই স্ট্যাটাসের পরেই উত্তপ্ত হয়ে উঠে সেখানকার রাজনৈতিক পরিবেশ। পক্ষে বিপক্ষে একাধিক যুক্তি-তর্ক নিয়ে একের পর এক স্ট্যাটাস দিতে থাকেন জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীরা। একাধিক বিএনপি নেতাকর্মী এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা অভিযুক্তকে জামায়াত নেতা দাবি করেছেন এবং রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তার বিভিন্ন ছবি সরবরাহ করছেন।
তবে জামায়াত নেতা কর্তৃক হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন কক্সবাজার সদর উপজেলা জামায়াতের আমির খোরশেদ আলম। তিনি বলেন, আব্দুল আল নোমান নামের কেউ সদর উপজেলার কোনো ইউনিটে জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত নন।
তিনি আরো বলেন, এটি মসজিদের জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ। রাজনৈতিক কোনো বিরোধ থেকে হামলার ঘটনা ঘটেনি। হামলাকারী যদি জামায়াতের হয়েও থাকে, সে সেখানে মুসল্লি হিসেবে গেছে, জামায়াতের কেউ হিসেবে যায়নি। একটা স্থানীয় জমি বিরোধের ঘটনাকে রাজনৈতিক রঙ মেশানো উচিৎ নয়।
স্থানীয় যুবদল নেতা কানন বড়ুয়া বলেন, হামলার শিকার সকলেই বিএনপির নেতাকর্মী। তাদের পরিবারটাই বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত। স্থানীয় সামাজিক বিষয় বলেই তাদের উপর রাজনৈতিক জায়গা থেকেই হামলা করা হয়েছে।
স্থানীয় ছাত্র সমন্বয়ক রিয়াদ মনি বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি নোমান সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা এবং বর্তমানে জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে শোনা যাচ্ছে। সন্ত্রাসী যে দলেরই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস খান জানান, ইতোমধ্যে উক্ত ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ