‘জব্বারের বলীখেলা’— ২০ বর্গফুটের মঞ্চে লড়বে বলীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: আর মাত্র একদিন পরেই শুরু হবে বহুল প্রতীক্ষিত জব্বারের বলীখেলা। এজন্য প্রস্তুত হচ্ছে বলীখেলার মঞ্চ। দ্রুতগতিতে চলছে মঞ্চ নির্মাণের কাজ।

আজ বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে লালদিঘীর মাঠে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মঞ্চের কাঠামো তৈরির কাজ প্রায় শেষের পথে। এবারের মঞ্চটি নির্মাণ করা হচ্ছে ২০ বর্গফুট আয়তন নিয়ে। যা দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে ২০ ফুট করে। বাঁশের খুঁটি গেড়ে নির্মাণ করা হয়েছে মঞ্চের মূল ভিত্তি। তারওপর সরু কাঠ দিয়ে মঞ্চের মেঝে বা পাটাতন তৈরির কাজ চলছে। ইতোমধ্যে মেঝে তৈরির কাজ প্রায়ই শেষ। এটাই বলীর মঞ্চের মূল ভিত্তি। তাই নির্মাণকারী বা আয়োজক পক্ষ গুরুত্ব সহকারে তৈরি করছেন এই মেঝে। কারণ এ মেঝের ওপর চারিদিকে বেষ্টনী দিয়ে তাতে ঢালা হবে বালু। আর এই বালুর মঞ্চেই অনুষ্ঠিত হবে চট্টগ্রাম ও দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করা জব্বার সওদাগরের ঐতিহাসিক বলী খেলা। এই মঞ্চের উপর খেলবেন ওজনদার বীর পালোয়ান বলীরা। তাদের সাথে আরও থাকবেন রেফারি, কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা। কাজেই এ মঞ্চটি হতে হবে যেমন শক্ত, তেমনি মজবুত।

নির্মাণ শ্রমিকরা জানান, বলী খেলার মঞ্চ নির্মাণ কঠিন কাজ। সভা, সমাবেশের মঞ্চ আর বলীখেলার মঞ্চ ভিন্ন জিনিস। সভা সমাবেশের মঞ্চ আকারে বড় হয়। তাই এটি মোটামুটি ভীতের উপর তৈরি করা যায়। কারণ আকারে বড় হওয়ায় এর ভারবহন ক্ষমতা সাধারণত বেশি থাকে। কিন্তু বলী খেলার মঞ্চ আয়তনে ছোট। তাই এর কঠিন ও শক্ত ভিত্তি করতে হয়।

নির্মাণ শ্রমিক আতাউল্লা জানান, গত তিন দিন আগে থেকে আমরা মঞ্চ নির্মাণ কাজ শুরু করেছি। এবার ২০/২০ ফুট আয়তনের মঞ্চ নির্মাণ করা হচ্ছে। কাঠের কাজ শেষের পথে। আগামীকাল বালু ঢালার কাজ ও চুড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়ে যাবে আশা করছি।

এ ব্যাপারে মঞ্চের নির্মাণকাজ তদারককারী বলীখেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব শওকত আনোয়ার বাদল বলেন, এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে রাস্তায় মেলা না বসার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমাদেরকে অবশ্যই শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে সবকিছু করতে হবে। তবে এ বলীখেলা সারাদেশের। সারাদেশ থেকে বিভিন্ন লোকজ পণ্য সামগ্রী নিয়ে বিক্রেতারা আসেন। লাখ লাখ মানুষের সমাগম হবে। এরা তো সড়কে ঘোরাফেরা করবেন। সবার তো সহযোগিতা লাগবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে ইনশাল্লাহ।

তবে এবারের মূল সড়কে মেলা না বসানোর ব্যাপারে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এর মধ্যেই দূর-দূরান্ত থেকে লোকজ, মণিহারী, হস্তশিল্পসহ নানা পণ্য সামগ্রী নিয়ে আসা বিক্রেতারা লালদিঘী এলাকায় আসতে শুরু করেছেন। তবে পসরা সাজানোর আগেই বিক্রেতারা পুলিশি বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছেন। এমন অবস্থায় অন্যান্য বারের চেয়ে এবার বিক্রি কমে যাওয়ার শঙ্কায় ভুগছেন তারা।

সিলেট থেকে হাতপাখা ও ময়ুরপঙ্খী পাখা নিয়ে তিনজনের একদল বিক্রেতা এসেছেন। কাঁধে হাতপাখার থলে আর হাতে ময়ুরপঙ্খী পাখা নিয়ে তারা তিন বিক্রেতা তিন স্পটে বসেছেন।

দলের এক সদস্য মো. ইব্রাহিম জানান, আমরা তো জানতাম না এবার রাস্তায় মাল নিয়ে বসতে দিচ্ছে না। এখন চট্টগ্রাম এসে শুনছি একথা। আমরা তিনজনে প্রায় লাখ খানেক টাকার পাখা আনছি। রাস্তায় মেলা না বসলে লোকজনও কম হবে। বেচাবিক্রিও কম হবে। আজকে মাত্র চার/পাঁচশ টাকার পাখা বিক্রি করছি। অথচ গতবছর মেলার দুই দিন আগে থেকে আমরা প্রত্যেকে ডেইলি দুই/তিন হাজার টাকার মাল বিক্রি কইরা ফেলছি।

চাটগাঁ নিউজ/ইউডি/এসএ

Scroll to Top