নিজস্ব প্রতিবেদক : নগরের চান্দগাঁওয়ে খেলার মাঠের আধুনিক ভার্সন টার্ফ উদ্বোধনের দিনেই ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ছাত্রদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক ছাত্রদল নেতা নিহতের খবর পাওয়া গেছে। নিহতের নাম জোবায়ের উদ্দিন বাবু (২৫)।
আজ শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকালে চান্দগাঁও থানাধীন ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় সংলগ্ন এলাকার একটি টার্ফ উদ্বোধন স্থলে এই ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে চলতি বছর ফেব্রুয়ারির দিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের জায়গায় স্থানীয় কাউন্সিলর এসরারুল হকের নিয়ন্ত্রণে সেখানে একটি টার্ফ নির্মাণ করেন। চান্দগাঁও ওয়ার্ড কার্যালয়ের পাশে নির্মিত টার্ফটি ইজারা নিয়েছিল সাবেক কাউন্সিলর মাহবুব আলমের ছেলে সাব্বির। কয়েক মাস চলার পর ছাত্র আন্দোলনে সরকার পতন হলে এই টার্ফটিও হামলা, ভাংচুরের কবলে পড়ে। হামলায় টার্ফের দেয়াল, আলোকবাতি, কিডস কর্ণারের বেশ ক্ষতি হয়। তবে টার্ফের মূল অংশ মাঠে তেমন ক্ষতি হয়নি।
আজ শুক্রবার বিকাল ৪ টার সময় টার্ফটি উদ্বোধনের দিন ধার্য ছিল। এই উপলক্ষে সেখানে সকল ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ শুক্রবার বিকালে টার্ফটি উদ্বোধন উপলক্ষে প্রীতি ম্যাচের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ হোসেন। তবে প্রীতি ম্যাচ চলাকালীন সময়ে আচমকা নগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি নওশাদ আল জাসেদুল রহমানের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। এতে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত জুবায়ের উদ্দীন বাবুকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জুবায়ের। এ ঘটনায় আরও চারজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে নগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি নওশাদ আল জাসেদুল রহমান, চান্দগাঁও থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আলফাজ, চান্দগাঁও ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাছিম উদ্দিন, সদস্য সচিব রুবেল, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. খোকন, চান্দগাঁও ওয়ার্ড যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল হাকিম, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আমজাদ, সহ-সম্পাদক ফয়সাল মোরশেদ, পারভেজরা মিলে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। তারা সবার চোখের সামনে জুবায়ের উদ্দীন বাবুকে হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, খেলা উদ্বোধনের আগে নওশাদ আমাকে ফোন করে টার্ফে পার্টনার রাখতে বলে। না হলে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমি ইজারাদারদের বিষয়টি জানিয়েছিলাম। খেলা চলাকালীন সময়ে এসে তারা হামলা চালায়। সবার চোখের সামনে ছুরিকাঘাত করে বাবুকে হত্যা করেছে। এসময় তারা আরও চারজনকে আহত করেছে।
এ ব্যাপারে চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনাস্থলে ব্যস্ত আছেন বলে কোন মন্তব্য না করে যোগাযোগ করার জন্য আরেকটি নম্বর দেন।
চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক সুমন বড়ুয়া জানান, পুরাতন চান্দগাঁও থানা এলাকায় কাউন্সিলর অফিসের পাশে টার্ফ সংলগ্ন এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় দুইজন ছুরিকাঘাতে আহত হয়। তাদেরকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জুবায়ের উদ্দীন বাবু মারা যান।
চাটগা নিউজ/উজ্জ্বল/এসএ