চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) এক ছাত্র গোসলরত অবস্থায় আরেক ছাত্রের ভিডিও ধারণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম সৌম্য দাস। তিনি চুয়েটের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৌশল বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। ঘটনার ৮ দিন পরেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এজন্য বুধবার (২২ অক্টোবর) রাত ১২টায় সৌম্যের বিচারের ৩ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবি হচ্ছে, সৌম্যের মোবাইলের ফরেনসিক টেস্ট করতে হবে, তার ছাত্রত্ব বাতিল করে আজীবন বহিষ্কার করতে হবে ও চুয়েট প্রশাসনকে বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে।
দাবিগুলো বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রশাসনকে ১ দিনের আলটিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা সৌম্যকে চুয়েট ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
জানা যায়, গত ১৪ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা হলের এস ব্লকের ৫ম তলার গোসলখানায় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থীর গোসল করার সময় তার ভিডিও ধারণ করেন সৌম্য। সেসময় গোসলরত শিক্ষার্থী ওপরের দিকে তাকালে সৌম্যের মোবাইল দেখতে পান ও তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, “আমি যখন তাকে ভিডিও করতে দেখি, তখন ও পাশের বাথরুমে ছিল। আমি সঙ্গে সঙ্গে বের হয়ে তার দরজা ধাক্কাতে থাকি। তার দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। একটু পর সে দরজা খুললে আমি তার ফোন কেড়ে নিই। পরে আমরা হলের বড় ভাইদের বিষয়টি অবহিত করি।”
জানা যায়, সৌম্যর টেলিগ্রাম অ্যাপে বিভিন্ন অসামাজিক, অশালীন ও সমকামী গ্রুপের অ্যাডমিন হিসেবে তাকে দেখা যায়। শয়তান উপাসনার গ্রুপের সঙ্গেও তার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়।
এ ঘটনার পর চুয়েটের মুক্তিযোদ্ধা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. বিপুল চন্দ্র মণ্ডল সৌম্যকে শহীদ তারেক হুদা (তার নিজ হল) হলের তৎকালীন প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. নিপু কুমার দাসের কাছে সোপর্দ করেন। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার মোবাইল জব্দ করে তাকে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনান ৮ দিন পরেও কেন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি- জানতে চাইলে চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোক্তার হোসাইন বলেন, “বিষয়টি প্রাথমিকভাবে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ তারেক হুদা হলের প্রভোস্টদের দেখার কথা ছিল। কিন্তু তারা আমাদেরকে আজ লিখিতভাবে জানিয়েছেন। শিগগিরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
অধ্যাপক ড. নিপু কুমার দাস বলেন, “ঘটনাটি ঘটার পর আমি ওই শিক্ষার্থীকে নিয়ে আসি। সে আমার হলে সংযুক্ত অবস্থায় ছিল। তার বাসা চট্টগ্রাম শহরে। তাকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ও মোবাইল জব্দ করা হয়। ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি।”
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সৌম্যর ভাষ্য, “আমি মোবাইলটা ওপরে রেখেছিলাম এবং হয়তো পানি বা ঘাম লেগে ভিডিও অন হয়ে গেছে। আমি ইচ্ছাকৃত করিনি।”
চাটগাঁ নিউজ/এসএ