চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন আব্দুল্লাহ আল নোমান: শাহাদাত হোসেন

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ‘আব্দুল্লাহ আল নোমান শুধু একজন রাজনীতিক নন, আমার রাজনৈতিক জীবনের অন্যতম শিক্ষক ও পথপ্রদর্শক। তাঁর কাছ থেকেই আমি শিখেছি ধৈর্যের সঙ্গে নেতৃত্ব দিতে হয়, সহনশীলতা দিয়ে সংগঠন গড়ে তুলতে হয়।’

সোমবার (২ জুন) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ‘জুলাই বিপ্লব স্মৃতি হলে’ চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির উদ্যোগে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মরহুম আব্দুল্লাহ আল নোমানের স্মরণে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মেয়র বলেন, ‘১৯৮৭ সালে মেডিকেল কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় নোমান ভাইয়ের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা। সে সময় ছাত্রদল গঠনে কিছু শিক্ষার্থী আমার বাসায় এসে নেতৃত্ব দিতে অনুরোধ করতো। পরে গোলাম আকবর খন্দকার ভাইয়ের বাসায় গিয়ে নোমান ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়। সেখান থেকেই আমার ছাত্র রাজনীতির পথচলা শুরু।’

তিনি আরও বলেন, ‘নোমান ভাই ছিলেন অসাধারণ সংগঠক। আমাদের মিছিলের খোঁজখবর রাখতেন নিঃশব্দে। অনেক সময় গাছের নিচে দাঁড়িয়ে দেখতেন— কারা মিছিলে অংশ নিয়েছে। পার্টি অফিসে এসে জানাতেন— ‘আজ তোমাদের মিছিলে ১২ জন ছিল।’ তাঁর মতো নিবেদিত নেতার অবদান আজও আমাকে অনুপ্রাণিত করে।’

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘তিনি ছিলেন সহিষ্ণুতা ও শালীনতার প্রতীক। কারও প্রতি রাগ দেখিনি। সাংগঠনিক দায়িত্বে দক্ষতা ও সাংস্কৃতিক চর্চার পৃষ্ঠপোষকতাও করেছেন। ছাত্রদলের পাশাপাশি আমাকে সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সারগাম’-এর আহ্বায়ক করেছিলেন।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, ‘আব্দুল্লাহ আল নোমান ছিলেন পরিচ্ছন্ন ও প্রজ্ঞাবান রাজনীতিক। তাঁর রাজনৈতিক জীবন ছিল অহংবোধ ও ক্ষমতার দম্ভমুক্ত। সব দলের কাছে ছিলেন গ্রহণযোগ্য। তিনি শুধু রাজনৈতিক নেতা নন, ছিলেন সামাজিক নেতৃত্বেরও প্রতীক।’

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামের রাজনীতিতে নোমান ছিলেন অভিভাবকতুল্য। তাঁর চিন্তা ছিল আধুনিক ও বাস্তবভিত্তিক। তিনি জনগণকেই রাজনীতির মূল শক্তি হিসেবে ভাবতেন।’

স্মরণসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হন নোমানের পুত্র সাঈদ আল নোমান। তিনি বলেন, ‘আমার পিতা পাহাড়সম সমস্যাকেও সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো সহজভাবে সমাধান করতেন। তিনি আমাদের মিতব্যয়িতা ও দূরদর্শিতার শিক্ষা দিয়েছেন। এমন একজন জননন্দিত মানুষের সন্তান হতে পারা আমার জন্য গর্বের।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার পিতা ক্ষমতার কেন্দ্রে থেকেও সংযম ও সততার অনন্য দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। তাঁর নাম ইতিহাসে সম্মানের সঙ্গে উচ্চারিত হবে।’

স্মরণসভায় কোরআন তেলাওয়াত করেন সহকারী অধ্যাপক ওসমান গনি। পিপলস ভিউ সম্পাদক ওসমান গণি মনসুরের সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য শাহনেওয়াজ রিটনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক নীতিশ দেবনাথ, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নছরুল কদির, বিএসএফএফের চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহমুদুল হক, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব ও দৈনিক আমার দেশের আবাসিক সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি, বিএনপি নেতা কে এম ফেরদৌস, অধ্যাপক ছিদ্দিক আহমেদ চৌধুরী, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. নাজিম উদ্দিন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, কবি ও নাট্যকার অভীক ওসমান প্রমুখ।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top