চিন্ময়ের জন্য আদালতে হাঙ্গামা: সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে আদালতে হাঙ্গামা, সেনাবাহিনীর ওপর এসিড নিক্ষেপসহ নানা অপরাধে টিপু দাশ গোপাল (৩৫) নামে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক এক কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটা ব্রিক ফিল্ড রোডের মতিনাবাদ আবাসিক এলাকা থেকে তাকে কোতোয়ালী থানা পুলিশ গ্রেফতার করে।

কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবদুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তির বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনে হামলা, ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে আদালতে হাঙ্গামা, সেনাবাহিনীর ওপর এসিড নিক্ষেপ, রাষ্ট্রদ্রোহসহ আরও বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ১০টি মামলা আছে।

গ্রেফতার টিপু দাশ গোপাল নগরীর পাথরঘাটা হরেশ চন্দ্র মুন্সেফ লেইনে শান্তনেশ্বরী মন্দিরের হরি বাবুর বাড়ির বাসিন্দা হরিজল দাশের ছেলে।

পুলিশের ভাষ্য, টিপু দাশ নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক। তিনি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের ক্যাডার হিসেবে এলাকায় পরিচিত।

উল্লেখ্য, সনাতন ধর্মাবলম্বী সংগঠন ইসকন নিয়ে পোস্টের জেরে গত বছরের ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর হাজারী লেইনে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। ইসকনের অনুসারীরা এক দোকানিকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। তাকে উদ্ধারে যাওয়া পুলিশ ও সেনাসহ যৌথবাহিনীর সদস্যদের ওপর এসিড নিক্ষেপ করা হয়। এতে সেনাবাহিনীর পাঁচ সদস্যসহ অন্তত ১২ জন আহত হন। এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান মামলা দায়ের করেন। এতে ৪৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করা হয়।

গত বছরের ৩০ অক্টোবর নগরীর কোতোয়ালী থানায় জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে সনাতনী জাগরণ মঞ্চের সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। ওই মামলায় গত বছরের ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কারাগারে পাঠানোর নির্দেশকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গনে ত্রাস সৃষ্টি করে চিন্ময়ের অনুসারীরা। প্রায় তিনঘণ্টা তাকে বহনকারী প্রিজনভ্যান আদালত এলাকায় আটকে রাখে তারা। একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে নগরীর লালদিঘীর পাড় থেকে কোতোয়ালী এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়।

আইনজীবী হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা, গাড়ি ভাঙচুর, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালী থানায় মোট ছয়টি মামলা হয়।

কোতোয়ালী থানা পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গ্রেফতার টিপু দাশ এসব মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। এসব মামলায় তাকে শনিবার আদালতে পাঠানো হবে।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top