চিটাগং ক্লাব থেকে উদ্ধার সাবেক সেনাপ্রধানের মরদেহ!

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক:  চট্টগ্রাম নগরীর চিটাগং ক্লাব থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) এম হারুন অর রশিদের মরদেহ।

আজ সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম ক্লাবের ৩০৮ রুম থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে সাবেক এই সেনাপ্রধানের মরদেহ উদ্ধারের খবরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ অবস্থান করছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) দক্ষিণ জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আলমগীর হোসেন।

তিনি বলেন, রাতে তিনি একটি বিয়ের দাওয়াতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এরপর ক্লাবের ৩০৮ রুমে রাত্রিযাপন করেছিলেন তিনি। সকালে তার একটা মিটিং ছিল। তার মোবাইলে বার বার কল দেওয়া হলেও তিনি রেসপন্স করছিলেন না। এরপর দরজায় নক করা হলেও কোনো সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরবর্তীতে বারান্দায় গ্লাসের দরজা ভেঙে বিছানায় তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, আপাতত তার মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। বর্তমানে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তা, ক্রাইম সিন ইউনিটসহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজন উপস্থিত রয়েছেন। পরিবারের অনুমতি সাপেক্ষে মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হবে। এরপর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

সাবেক সেনাপ্রধানের নিকটাত্মীয় এনাম আহমেদ বলেন, আজ উনার একটি মামলায় আদালতে হাজিরার কথা ছিল। সেজন্যই মূলত তিনি ঢাকা থেকে এসেছিলেন। চট্টগ্রাম ক্লাবের ভিআইপি রুমে একাই ছিলেন। সম্ভবত স্ট্রোক করে মারা গেছেন।

আর এম হারুন অর রশিদের ছোট বোনের স্বামী ডা. জহির বলেন, উনি জীবদ্দশায় ওনার মৃত্যুর পরের তিনটি ইচ্ছের কথা বলেছেন। সেগুলো হলো— ওনার দাফনে যেন দেরি না হয়, উনার কবরটা যেন ওনার বাবার কবরের নিকটে হয় এবং উনার মৃত্যুর পর যেন  কোনো ধরণের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা গ্রহণ করা না হয়।

এদিকে তাঁর মৃত্যুর খবরে চট্টগ্রাম ছুটে এসেছেন দীর্ঘদিন কারাভোগ করা ডেসটিনি-২০০০ লি. এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর রফিকুল আমিন। তিনি বলেন, ‘সকালে খবর পেয়েছি, তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা শোকাহত।’

উল্লেখ্য, এম হারুন অর রশিদ ২০০০ সালের ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ২০০২ সালের ১৬ জুন অবসরে যান। চাকরি থেকে অবসরের পর তিনি ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ ও অর্থ পাচারের একটি মামলায় সাবেক এই সেনাপ্রধানকে কারাগারেও যেতে হয়েছিল।

এম হারুন অর রশিদের জন্ম ১৯৪৮ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ধলই ইউনিয়নের কাটিরহাটে। ছয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান ও সাহসিকতার জন্য তিনি বীর প্রতীক উপাধিতে ভূষিত হন।মৃত্যুকালে তিনি এক স্ত্রী, এক ছেলে ও এক কন্যাসন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন/জেএইচ

Scroll to Top