‘চিকিৎসকের চেয়ে দালালের ইনকাম বেশি’

দালালের

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের মাসিক ভাতা বৃদ্ধি এবং পোস্টগ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকদের বকেয়াসহ ভাতা পরিশোধের দাবিতে আবারও দুইদিনের কর্মবিরতিতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশিক্ষণরত ও শিক্ষানবীশ চিকিৎসকেরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা।

রোববার (২৪ মার্চ) সকাল ১১টায় চমেক হাসপাতালের সামনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মানববন্ধন করেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা।

মানববন্ধনে পোস্টগ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকরা বলেন, ‘আমাদের থাকার কথা ছিল হাসপাতালের ওয়ার্ডে, অথচ আমাদের থাকতে হচ্ছে রাজপথে। আমরা কর্মবিরতি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছি। আমরা সপ্তাহে সাতদিন, মাসে ৩০দিন, বছরে ৩৬৫ দিন ডিউটি করি। আমাদের নির্দিষ্ট কোনো কর্মঘণ্টা নেই। অথচ আমাদের যে ভাতা দেওয়া হয়, সেটা অমানবিক।’

চমেক হাসপাতালে র‍্যাবের অভিযানে আটক ৩৯ দালাল

 

মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের মাসিক বেতন ডাক্তারদের মাসিক বেতনের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি উল্লেখ করে পোস্টগ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসক আল আমিন ইসলাম বলেন, ‘চমেক হাসপাতালের আনাচে-কানাচে বিভিন্ন ধরনের দালাল আপনারা পাবেন, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালাল, হাসপাতাল-ক্লিনিকের দালাল। মাস শেষ ডাক্তারদের থেকে এসব দালালদের বেশি ইনকাম করে। ’

কর্মবিরতির সিদ্ধান্তে অনড় থাকার কথা জানিয়ে আল আমিন বলেন, ‘মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। দুই দিনের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হলে পোস্ট গ্রাজুয়েট ও ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা কেউ হাসপাতালে এবং ওয়ার্ডে ফেরত যাবেন না। আমরা আমাদের দাবিতে অনড় থাকব।’

চমেক ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. মোহাম্মদ ফয়েজউল্লাহ বলেন, ‘একজন পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেইনি ডাক্তারের ভাতা ২৫ হাজার টাকা। একজন ইন্টার্ন চিকিৎসকের ভাতা মাত্র ১৫ হাজার টাকা। এ টাকায় কি বর্তমান বাজারে চলা সম্ভব? আবার বলে দিয়েছে, প্রাইভেট প্র্যাকটিস করা যাবে না। তাহলে ২৫ হাজার টাকায় একজন মানুষ কিভাবে নিজে চলবে আর সংসার চালাবে? আবার তাদের ছয় মাসের বেতনও বকেয়া আছে।’

দালাল
দালালের অভয়ারণ্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

 

তিনি বলেন, ‘আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি। আট ঘণ্টা থেকে চৌদ্দ ঘণ্টা পর্যন্ত ডিউটি দিয়ে, শুক্রবারও ছুটি নেই, তাহলে কেন ন্যায্য সম্মানি দেওয়া হবে না? আমাদের দাবি হচ্ছে, পোস্ট গ্রাজুয়েটদের ভাতা ৫০ হাজার টাকা এবং ইন্টার্নদের ৩০ হাজার টাকা করতে হবে। এ দাবিতে আমাদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।’

চার দফা দাবিতে শনিবার (২৩ মার্চ) ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক সমাবেশ থেকে সারাদেশে পোস্টগ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসক ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়। এরপর রাত ৮টা থেকে দেশের সব হাসপাতালে একযোগে শিক্ষানবীশ চিকিৎসকেরা সেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।

জানা গেছে, শনিবার রাত থেকে চমেক হাসপাতালের কোনো ওয়ার্ডে শিক্ষানবীশ চিকিৎসকেরা সেবা দেননি। এতে তাৎক্ষণিক ও নিয়মিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। বহির্বিভাগে ও ওয়ার্ডে হাজারো রোগীকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top