চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চিকিৎসকদের সব চেষ্টা বৃথা করে নগরীর ত্রাস হিসেবে পরিচিত আলী আকবর প্রকাশ ঢাকাইয়া আকবরের (৪৪) মৃত্যু হয়েছে।
আজ রোববার (২৫ মে) সকাল ৮টার দিকে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আকবরের মৃত্যুর বিষয়টি চাটগাঁ নিউজকে নিশ্চিত করেছেন চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) নুরুল আলম আশেক।
এর আগে শুক্রবার (২৩ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায় তিনি প্রতিপক্ষের হামলায় গুলিবিদ্ধ হন। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন দর্শনার্থী জান্নাতুল বাকী (৩০) এবং মহিম ইসলাম রাতুল (৮) নামে এক শিশু। তারা চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এদিকে আকবরের স্বজনদের দাবি- কারাগারে বন্দী ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনের অনুসারীরা তাকে গুলি করে। এতে তার শরীরে ৬টি গুলি লাগে।
নিহত আকবর চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার মঞ্জু মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজির ১০টি মামলা রয়েছে। ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত আকবর।
কারাগারে আটক ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনের অনুসারী ও তার স্ত্রী তামান্না শারমিনকে নিয়ে কটূক্তি করে নিজের ফেসবুক আইডিতে প্রায়ই ভিডিও দিতেন আকবর। পাশাপাশি সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্নাও আকবরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে নানা ভিডিও দিতেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায় রাত আটটার দিকে বসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন আকবর। ওই সময় হঠাৎ ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল এসে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে আকবরকে লক্ষ্য করে। গুলিতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে অস্ত্রধারীরা চলে যায়। পরে গুলিবিদ্ধ আকবরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেসময় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, আকবরের অবস্থা সংকটাপন্ন। তার বুকে-হাতে-পায়ে ৬টি গুলি লেগেছে। তবুও তারা সফলভাবে অস্ত্রপাচার করে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছিল। সেখানে ৭২ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই আজ রোববার সকালে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার তিনদিন পার হলেও এখনো থানায় কেউ মামলা করতে আসেনি। তবুও আমরা আলোচিত এই ঘটনায় যুক্তদের শনাক্তের চেষ্টা করছি।
এর আগে ১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিং মল থেকে গ্রেপ্তার হন সন্ত্রাসী সাজ্জাদ। এরপর ৩০ মার্চ নগরের বাকলিয়া এক্সেস রোডে একটি প্রাইভেট কারকে লক্ষ্য করে ব্রাশফায়ার করে। এতে দুজন নিহত হন। তবে বেঁচে যান কারে থাকা ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন। এ ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার এক আসামি আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেছেন, এলাকায় ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়াসহ পাঁচ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা সরোয়ারকে লক্ষ্য করে গুলি করেছিলেন।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ