চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: দুর্নীতির তদন্ত বা অনুসন্ধান বাধাগ্রস্ত করতে আগামীতে কেউ চাপ প্রয়োগ করলে তাদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
দুদকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সেগুনবাগিচায় দুদকের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
মতবিনিময় সভায় দুদকের কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহ্সান ফরিদ ও সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীম এসময় উপস্থিত ছিলেন।
দুদকে অযাচিত চাপ প্রয়োগ করা হয় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, যিনি দুর্নীতিগ্রস্ত হন তার উপরেই চাপ বেশি আসে। দুর্নীতিগ্রস্ত না হলে, ঘাড় সোজা থাকলে চাপ কম আসবে। আপনাকে যারা চাপ দেবে তারাও চিন্তা করবে চাপ দেবে কী না। আগামী দিনগুলোতে যারা দুদকে অন্যায়ভাবে চাপ প্রয়োগ করবে আমরা তাদের নাম প্রকাশ করবো।
দুদক এখনো নখ-দন্তহীন বাঘ কী না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দাঁত যতটা তীক্ষ্ণ হওয়ার দরকার ছিল, ততটা তীক্ষ্ণ এখনো হয়নি। নখও পুরোপুরি গজায়নি। মাঝামাঝি একটা পর্যায়ে আছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গার দুর্নীতি প্রতিরোধ করা দুদকের একার কাজ নয় বলে মনে করেন দুদক চেয়ারম্যান।
দুর্নীতি প্রতিরোধে সফল দেশ হিসেবে সিঙ্গাপুরের উদাহরণ তুলে ধরে আবদুল মোমেন বলেন, দেশটির প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান নিজেরাই দুর্নীতি নিরোধক। এর বাইরে তাদের আমাদের মতো একটা প্রতিষ্ঠান আছে যার কাজ হচ্ছে দেখাশোনা করা, খবরদারি করা। যেই দুর্নীতিগুলো অফিসে সমাপ্ত হওয়ার কথা; সেখানে ইন্টার্নাল অডিট হয়। এক্সটারনাল অডিট হয়, তারপরও আমার কাছে আসে কী জন্য। আসার তো কোনো কারণই নাই।
সঠিক সময়ে সুন্দর নির্বাচন হবে এমন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ভোটে কালো টাকার দৌরাত্ম আগে দেখেছি। এবারও হয়তো হবে। দুর্নীতিবাজদের শাস্তি বাড়ানোর প্রস্তাব করে তিনি বলেন, আপনি ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করলেন। ১ কোটি টাকা এদিক সেদিক করলেন, ৯ কোটি টাকাই লাভ। তার চেয়ে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের ১০০ কোটি টাকা দন্ড দেওয়া হলে সেটা আর করবে না।
নির্বাচনী হলফনামা ইসির আগে চেয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, যখন সম্পদ বিবরণী (হলফনামা) দাখিল করা হয়; দাখিল করা ও চূড়ান্ত করার মাঝামাঝি সময় খুবই কম। সরকার যদি ঘোষণা দিতো, নির্বাচনী হলফনামা আগে দুদককে দিতে হবে; তাহলে আমরা একটা টাস্কফোর্স গঠন করতাম। আমরা হয়তো সবারটা করতে পারতাম না। এই দেশের সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত নয়। বড় বড় সন্দেহভাজনদের বিষয়ে আগে পরীক্ষা করে ইসিকে দিতে পারতাম।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের হাতে সময় খুবই কম। আপনারা হুইসেল ব্লো করবেন, আমরা আমাদের শক্তি সামর্থ দিয় সেটা পরীক্ষা করার চেষ্টা করবো।
নির্বাচন পরবর্তী সময়ে হলফনামা পরীক্ষা করা হবে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, না হওয়ার কোনো কারণ নেই। ১০০ বার করবো। উই আর নট সাই। কালো টাকার ব্যবহার কমাতে উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিবি বলেন, আমাদের সম্পদ খুব সীমাবদ্ধ। লোকবল সীমিত। আমরা ৫-৭ জনের একটা টিম গঠন করতে পারি কি না, সেটা দেখবো।
উপদেষ্টাদের পিএসের দুর্নীতির অনুসন্ধানের অগ্রগতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের চারটা ফাইল ছিল। সেগুলোর অনুসন্ধান শেষ হওয়ার পথে, কাজগুলো সম্পন্ন হয়নি। সম্পন্ন হলে সবাই জানবে।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ







