চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) সংবিধান যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে প্রশাসনের সাথে শিক্ষার্থীদের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে চাকসু সংবিধান রিভিউ কমিটি এ সভার আয়োজন করে।
এতে শিক্ষার্থীরা চাকসু সংবিধানের সংস্কার নিয়ে বিভিন্ন মতামত তুলে ধরে। এ মতামতের ভিত্তিতে আগামী ১০ দিনের মধ্যে একটি নীতিমালা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এ সভায় উপস্থিত ছিলেন রিভিউ কমিটির প্রধান ও চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো: আনোয়ার হোসেন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন মজুমদার এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চবির সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার অনেকদিন হলেও এখনো নীতিমালা তৈরি হয়নি। যেটির উপর ভিত্তি করে আমরা এখন মতামত দিতে পারতাম। কারা কারা প্রার্থী হতে পারবে; তা সংবিধানে পরিষ্কার করতে হবে। সহসম্পাদক পদগুলো বাতিল করে পদ আরো বাড়ানো হোক।
মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক, ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক পদ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদকের পদসৃষ্টির কথা বলেন তিনি।
চবি রাষ্ট্রচিন্তা’র পক্ষ থেকে চৌধুরী তাসনিম জাহান শ্রাবণ বলেন, এতদিনে চাকসুর নীতিমালা এবং রোডম্যাপ ঘোষণার কথা থাকলেও দুঃখজনকভাবে তা হয়নি। আমাদের সংবিধান অনুযায়ী চাকসু হলো একটা ক্লাবের মতো। কিন্তু চাকসুকে হতে হবে এমন একটা সংগঠন, যেটা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কথা বলবে। নির্বাচনে একজন প্রার্থীর যথাযথ যোগ্যতা নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়া প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসকে ব্যবহার করা যেতে পারে।
আরবি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নেয়ামাতুল্লাহ ফারাবি বলেন, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, স্কিল ডেভেলপমেন্ট ও ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক পদসৃষ্টি করতে হবে। কোন পদে কার কি কাজ, সেগুলো পরিষ্কারভাবে সংবিধানে বলা হয়নি। শূন্য পদ পূরণে স্পষ্ট করতে হবে।
শিক্ষা ও গবেষণা অনুষদের শিক্ষার্থী তানভীন কায়েস বলেন, যদি কোনো কার্যনির্বাহী সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে তবে সেটা কিভাবে খতিয়ে দেখা হবে? সংবিধানে যে আইন আছে, সেটা কিভাবে কার্যকর হবে? এক্ষেত্রে সংবিধানে পরিবর্তন এনে যথাযথ নীতিমালা প্রণয়ন করা যেতে পারে।
চবি ছাত্রদলের সদস্য আইয়ুর রহমান তৌফিক বলেন, চাকসু সভাপতি শিক্ষার্থী থেকে নির্বাচিত হতে হবে। মেয়েদের জন্য আলাদা সহ-সভাপতি পদ এবং মুক্তিযোদ্ধা, গণতন্ত্র ও অভ্যুত্থান বিষয়ক সম্পাদক পদ তৈরি করতে হবে। মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ অপরাধে জড়িত থাকলে কেউ প্রার্থী হতে পারবে না। ছাত্রলীগের দোসররা যেন প্রার্থী হতে না পারে সেদিকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে।
চাকুস সংবিধান কমিটির প্রধান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনেক চমৎকার মতামত পেয়েছি। আগামী ৩ দিনের মধ্যে শিক্ষার্থীরা কমিটিকে লিখিত প্রস্তাবনা দিবেন।’
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের মতামতগুলোকে সামনে রেখে আগামী ১০ দিনের মধ্যে একটি নীতিমালা তৈরি করা হবে। এরপর সেই নীতিমালা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে আবার বসা হবে।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ