নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের রাউজানে চাঁদা না পেয়ে এক চিকিৎসককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় দুই আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। একই আদেশে অপর আরেকজনের জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে।
কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলেন- পাইওনিয়ার হসপিটালের পরিচালক মনজুর হোসেন এবং সুপারভাইজার মো. জাহাঙ্গীর আলম।
ভুক্তভোগী ওই চিকিৎসকের নাম জাহাঙ্গীর আলম।
বুধবার চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কাজী সহিদুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
জামিনপ্রাপ্ত আসামি হলেন- হাসপাতালটির চেয়ারম্যান ডা. ফজল করিম ওরফে বাবুল।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাজমুল জানান, আসামি তিনজন উচ্চ আদালত থেকে ৮ সপ্তাহের জামিন প্রাপ্ত হয়ে বুধবার বিজ্ঞ চিফ জুডিশিয়াল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাদের মধ্যে দুইজনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পুলিশি প্রতিবেদন জমা পর্যন্ত অপর একজনকে জামিন দেন। গত ২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভুক্তভোগী চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম (৫৫) মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- রাউজান থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, উপপরিদর্শক (এসআই) টোটন মজুমদার, রাউজান থানার সাবেক এসআই শাফায়েত আহমদ।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়- ২০১৫ সালের ১৫ এপ্রিল রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়ার বাসিন্দা চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম স্থানীয় পথেরহাটে তার পরিচালিত প্রাইভেট চেম্বার অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখা অবস্থায় তাকে সাদা পোশাকে অপহরণ করা হয়। এরপর তার মাথায় পিস্তল রেখে চিৎকার না করতে বলে এবং আসামিরা চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে মারধর করে। পরে এসআই টোটন মজুমদারসহ আসামিরা মিলে একটি মিথ্যা মামলা সাজায়। সেই মামলার প্রেক্ষিতে ১৫ এপ্রিল রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে প্রায় ৮ ঘণ্টা পর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
এসআই টোটন মজুমদার তাকে বিএনপির কমিটিতে নাম থাকায় ক্রসফায়ার দেওয়ার হুমকি দেন; অন্যথায় বাঁচতে চাইলে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় এসআই টোটন মজুমদার, এসআই শাফায়েত আহমদ, সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলমকে অপহরণ করে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ আসামি পাইওনিয়ার হসপিটালের চেয়ারম্যান ডা. ফজল করিমের সহায়তায় ওই মিথ্যা মামলার চার্জশিট দিয়ে মামলার বিচার নিষ্পত্তির জন্য ২০১৫ সালের ১৮ জুন সংশ্লিষ্ট গ্রাম আদালতে পাঠান বলেও মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
চলতি বছরের ১৩ আগস্ট আসামি পাইওনিয়ারের সুপারভাইজার মো. জাহাঙ্গীর আলম হলফনামা ঘোষণা করেন যে- রাউজান থানার এসআই টোটন মজুমদার, সাবেক এসআই শাফায়েত আহমদ, তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশের আদেশে এবং স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের চাপে পড়ে মিথ্যা মামলায় বাদী হিসেবে যুক্ত হন। ওই মিথ্যা মামলাটি প্রত্যাহার করলে তার কোনো আপত্তি নেই।
পরে গত ২৯ আগস্ট গ্রাম আদালতে মামলাটি বাদী ও সাক্ষীর হলফনামা বিবেচনা করে এবং অভিযোগকারী পক্ষের অনুপস্থিতি ও মিথ্যা অভিযোগ হিসেবে প্রমাণ হওয়ায় সেটি খারিজ করা হয়।
চাটগাঁ নিউজ/উজ্জ্বল