চাটগাঁ নিউজ ডেস্কঃ নগরীর পোর্ট কানেকটিং রোডের উন্নয়ন কাজকে ঘিরে ৪০ কোটি আত্মসাৎ এবং ৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ রয়েছে প্রকল্পের ঠিকাদার, চসিকের তৎকালীন প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ও একটি বেসরকারি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এই অনিয়মের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (৬ মার্চ) অভিযোগের তদন্তে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে আসছেন দুদকের পরিচালক মো. বেনজীর আহম্মদ। আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনি সেখানে অবস্থান করবেন।
দুদকের তথ্যসূত্রে জানা যায়, উত্থাপিত অভিযোগ অধিকতর তদন্তে দুদক প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক মো. বেনজীর আহম্মদকে কয়েকদিন আগে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছিলো।
চসিকের থেকে জানা গেছে, পোর্ট কানেকটিং রোডের উন্নয়ন কাজের জন্য চারটি প্যাকেজে নিয়োগ দেওয়া হয় ঠিকাদার। এর মধ্যে দুই নম্বর প্যাকেজে বড়পোল থেকে তাশফিয়া আনন্দিপুর গেট পর্যন্ত এক দশমিক ৬৭৫ কিলোমিটার সড়কের জন্য ৫০ কোটি ৫৮ লাখ ৬৩ হাজার ৩৩৯ টাকায় মেসার্স রানা বিল্ডার্সকে ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর কার্যাদেশ দেওয়া হয়। একইদিন তিন নম্বর প্যাকেজে নিমতলা বিমান চত্বর থেকে বড়পোল ব্রিজ পর্যন্ত এক দশমিক ৬৮২ কিলোমিটার সড়কের জন্য ৫০ কোটি ৮২ লাখ ৭০ হাজার ৩৩৮ টাকায় মেসার্স রানা বিল্ডার্স–সালেহ আহমদকে (জেভি) কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চসিকের প্রধান নির্বাহী কমকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম চাটগাঁ নিউজকে বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নথিপত্র দিয়ে সহযোগিতা করতে বলে দিয়েছি। এদিকে ২৯ ফেব্রুয়ারি দুদকের ইস্যুকৃত একটি চিঠিতে বলা হয়, পরস্পর যোগসাজশে (যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ) প্রতারণা ও জালিয়াতি, ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে নিজেরা লাভবান হওয়ার অথবা অপরকে লাভবান করার অসৎ উদ্দেশ্যে প্রকল্পের কার্যাদেশ ও বিল প্রদান করে। জালিয়াতির মাধ্যমে রেকর্ডপত্র সৃষ্টি ও তা খাঁটি হিসেবে ব্যবহার এবং সরকারের আর্থিক ক্ষতিসাধন করেছে। এছাড়া ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে সুদাসলে ২২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা এবং ২৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অপরাধ করেছে।
তবে সৃষ্ট অনিয়ম তদন্ত শুরু করে দুদক। এর প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ১০ মে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আটজনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে দুদক। ওই মামলায় চসিকের সাবেক প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা সাইফুদ্দিনকে যুক্ত করে চার্জশিট দেওয়া হয় গত বছরের ১৪ আগস্ট। যদিও ২১ আগস্ট শুনানিতে চার্জশিট গ্রহণ না করে তা পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। অবশ্য আর্থিক অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ায় গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে অবসরে পাঠায় চসিক।
দুদকের মামলায় যাদের আসামি করা হয় তারা হচ্ছেন মেসার্স রানা বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেডের সাবকন্ট্রাকটর কুমিল্লার ঝাউতলা এলাকার মো. জাকির হোসেন, ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আলম, ফেনী সদর এলাকার বাসিন্দা ছালেহ আহমদ, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের (ইউসিবিএল) এফভিপি মো. সরোয়ার আলম, এভিপি মো. আনিসুজ্জামান, এফএভিপি ছাইফুল আলম মজুমদার, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মকামে মাহমুদুল ইসলাম আরেফিন ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার দেবু বোস।
চাটগাঁ নিউজ/এসবিএন