চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহারের দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে শিক্ষকদের কর্মবিরতির কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সকল বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।
অন্যদিকে একই দাবিতে দিনভর কর্মবিরতি পালন করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষকদের কর্মবিরতির কারণে তা সম্ভব হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চলমান কর্মবিরতির ফলে চবির কোনো বিভাগেই প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু করা যায়নি বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও ভর্তি কমিটির সচিব এস এম আকবর হোছাইন।
সরকার ঘোষিত পেনশনস্কিম বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহবানে আজ সোমবার (১জুন) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে চবি শিক্ষক সমিতি। এতে অনিশ্চয়তায় পড়েছে প্রথম বর্ষের উদ্বোধনী ক্লাস। এদিকে উদ্বোধনী ক্লাস না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা।
মোহাম্মদ পরাগ নামে আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটে ভর্তি হওয়া আরেক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আন্দোলনের কারণে আমাদের ক্লাস হয়নি। কবে হবে সে বিষয়েও আমাদের কিছু জানানো হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ক্লাস নিয়ে আমাদের অনেক প্রত্যাশা ছিল। আমরা বাড়ি থেকে ক্যাম্পাসে এসে বসে আছি, অথচ আমাদের সেই ক্লাসই হচ্ছে না। বিষয়টি অত্যন্ত হতাশার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও ভর্তি কমিটির সচিব এস এম আকবর হোছাইন বলেন, ক্লাস শুরুর বিষয়টা বিভাগের চেয়ারম্যান ও ফ্যাকাল্টির ডিনদের উপর। উনারা কর্মবিরতি পালন করার কারণে ক্লাস শুরু করা যায়নি।
ক্লাস কবে নাগাত শুরু হতে পারে জানতে চাইলে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে আমরা গতকাল প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু করতে পারিনি। আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ক্লাস শুরু হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এ. বি. এম. আবু নোমান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক সম্প্রতি জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তিকরণ ও শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহবানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবে।
এদিকে একই দাবীতে কর্মবিরতি পালন করছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষকরা। এ কারণে বিভিন্ন বিভাগে চলমান স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সকল পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে স্নাতক পর্যায়ে চলমান লেভেল-৩ টার্ম-১ এবং লেভেল-২ টার্ম-১ পরীক্ষা ২০২৩ এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সকল পরীক্ষা অনিবার্য কারণবশতঃ স্থগিত ঘোষণা করা হলো। স্থগিতকৃত পরীক্ষা সমূহের তারিখ ও সময়সূচি পরবর্তীতে স্ব স্ব বিভাগ/ ইন্সটিটিউট থেকে ঘোষণা করা হবে।
চুয়েটের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতির পরিস্থিতির জন্য এক সমন্বিত সভায় চুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এবং বিভিন্ন অনুষদের ডীনদের উপস্থিতিতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। স্থগিত পরীক্ষাগুলো কখন হবে এ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলেও তিনি জানান।
চাটগাঁ নিউজ/এসআইএস