চবির ফারসি বিভাগে শিক্ষার্থীদের তালা, পরীক্ষা স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: পরীক্ষায় বহিষ্কার হওয়ার এক বছরেও কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এতে বিভাগের চলমান তৃতীয় বর্ষের একটি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিভাগের অফিস ও পরীক্ষার হলে তালা দেন তারা।

জানা গেছে, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে বিভাগের ২য় বর্ষের ২০৪ নম্বর কোর্সের পরীক্ষায় মাহমুদুল ইসলাম হাসিব ও হাবিবুর রহমান নকল করে ধরা পড়েন।

সে বছর পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক ড. মো. আবুল হাসেম। পরে নিয়মানুযায়ী তাদের পরীক্ষার খাতা রেজিস্ট্রার অফিসে পাঠানো হলেও গত এক বছরে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত চবির শৃঙ্খলা কমিটির পক্ষ থেকে আসেনি। ফলে এ দুই শিক্ষার্থী এখনো পর্যন্ত ২য় বর্ষের রেজাল্ট পাননি। এমনকি তারা ৩য় বর্ষেও ভর্তি হতে পারেননি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের ভিএক্স গ্রুপের অনুসারী তাদের বন্ধুরা বিভাগের অফিস কক্ষ ও পরীক্ষার হলে তালা দেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মাহমুদুল ইসলাম হাসিব বলেন, আমার দ্বিতীয় বর্ষের রেজাল্ট হয়নি। যার কারণে আমি তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিতে পারছি না। এ বছর পরীক্ষা দিতে না পারলে আমি ছাত্রত্ব হারাবো। বিভাগ থেকে আমার খাতা সময়মতো পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে পাঠানো হয়নি। কয়েক মাস পরে পাঠানো হয়েছে। তাই তারা আর সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।

ছাত্রলীগের উপগ্রুপ ভিএক্সের নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয় বলেন, একটা ছেলে পরীক্ষায় বহিষ্কার হয়েছিল। কিন্তু তার বিষয়ে দুই মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত আসার কথা থাকলেও একবছরেও কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি কর্তৃপক্ষ। যদিও এটা ডিসিপ্লিনারি কমিটির কাজ, তবে বিভাগও এর দায় এড়াতে পারে না। তাই তার বন্ধুরা বিভাগে তালা দিয়েছে।

তৎকালীন পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবুল হাসেম বলেন, এটা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাজ। আমরা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ অফিসে খাতা পাঠিয়ে দিয়েছি। তারা সিদ্ধান্ত নিবেন। এখানে আমাদের কোনো কাজ নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক চৌধুরী আমির মোহাম্মদ মুছা বলেন, গত বছর তাদের নকল ধরা হলেও বিভাগ আমাদের খাতা দিয়েছে ফেব্রুয়ারিতে। তাছাড়া সম্প্রতি শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং না হওয়ায় কিছুদিন আগেও আমরা উপাচার্যকে জানিয়েছি। তিনি কোনও সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন না। মিটিং হলে সেখানে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এরকম নকল ধরা পড়লে শিক্ষার্থীদের সাধারণত এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ওই দুই শিক্ষার্থীকে বলেছিলাম, তোমরা দ্বিতীয় বর্ষের সঙ্গে আবার পরীক্ষা দাও। তারা কথা শুনেনি। ইতিমধ্যে দ্বিতীয় বর্ষের দুইটা পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে। এখন তারা যদি এক বছরের জন্য বহিষ্কার হয়, তাহলে দুই বছরের অ্যাকাডেমিক গ্যাপে পড়ে যাবে। তবে বিভাগ যদি সুপারিশ করে শাস্তি কমানোর জন্য, তাহলে শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে তাদের বিষয়ে উপাচার্য বিবেচনা করতে পারেন।

Scroll to Top