সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি : তেতিআনা বয়স ৪৪ বছর। রাশিয়ার নাগরিক। পেশায় একজন যোগব্যায়াম প্রশিক্ষক। তিনি রাশিয়ার স্মোলেনস্ক সিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। সনাতন ধর্মাবলম্বী। পর্যটক হিসেবে বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছেন। কিন্তু এর মধ্যে গত ২৩ মে মরণব্যাধী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তার বাবা প্যাভল। কিন্তু বাংলাদেশে অবস্থানের কারণে শেষবারের মত বাবার মুখখানি দেখা সম্ভব হয়নি। তাই বাবার আত্মার শান্তির জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান চন্দ্রনাথ ধামে ব্যাস কুণ্ডে এসে পিণ্ডদান করেন। শুধু তাই নয় বাবার আত্মার শান্তির জন্য যাবেন নেপালের পশুপতিনাথ মন্দিরে। গত ১৪ দিন ধরে চন্দ্রনাথ ধামের অতিথিশালার মধ্যে রয়েছেন তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, আমি ইউরোপের দেশ রাশিয়ার নাগরিক। সেখানে একটি খাদ্য কোম্পানিতে ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্বে ছিলাম। ওই চাকরি ছেড়ে দিয়ে বর্তমানে যোগব্যায়ামের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছি। আমার দুজন সন্তান রয়েছে। দুবছর আগে মারা যান মা। দুবছরের মাথায় মরণব্যাধি ক্যান্সারে মারা যান বাবা। বাবা খনিজ পদার্থ আহরণের কাজে নিয়োজিত ছিলেন।
তিনি জানান, বাবার মৃত্যুর সংবাদে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলেন। বাবার পরকালে শান্তির জন্য চন্দ্রনাথ ধামের ব্যাস কুণ্ডের মধ্যে পিণ্ডদান করেন।
তিনি আরও বলেন, চন্দ্রনাথ ধাম সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পবিত্রস্থান। আমি এখানে এসে খুব ভালো অনুভব করছি। চন্দ্রনাথ ধাম তীর্থস্থানটি মনোরম পরিবেশের মধ্যে খুবই সুন্দর। চন্দ্রনাথ ধাম ছাড়াও সীতাকুণ্ডের আশেপাশে এলাকাগুলো খুবই সুন্দর। আমি এখানে অনেক জায়গায় ঘুরেছি। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল খেয়ে স্বাদের যথেষ্ট প্রশংসা করেন।
চন্দ্রনাথ ধামের ভৈরব মন্দিরের পুরোহিত রণধীর বলেন, আমি তার বাবার পিণ্ডদান কাজটি সম্পাদন করেছি। চন্দ্রনাথ ধামে প্রায় সময় বিভিন্ন দেশের বিদেশি পর্যটকরা উপাসনার জন্য আসেন। এটা আমাদের গর্বের বিষয়। রাশিয়া থেকে যে ভদ্র মহিলাটি এসেছেন তিনি প্রতিদিন প্রায় ১২০০ ফুট উপরে উঠে শিবের উপাসনা করেন। চন্দ্রনাথ ধামের প্রতি তার ভক্তি ও শ্রদ্ধা আমাকে মুগ্ধ করেছে।
চাটগাঁ নিউজ/দুলু/এসএ