চট্টগ্রাম ৭-৮ সহ ৩৯টি সংসদীয় আসনে পরিবর্তন এনেছে ইসি 

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ কার্যক্রম। এরই অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম ৭ এবং ৮ সহ দেশের ৩৯টি আসনে পরিবর্তন এনে ৩০০ সংসদীয় আসনের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ বুধবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে এ তালিকা প্রকাশ করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সংস্থাটি।

চট্টগ্রাম-৭ আসনটি চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া উপজেলা এবং বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর খরণদ্বীপ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম-৮ আসনটি চট্টগ্রাম জেলার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৩নং পাঁচলাইশ, ৪নং চান্দগাঁও, ৫নং মোহরা, ৬নং পূর্ব ষোলশহর ও ৭নং পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড, বোয়ালখালী পৌরসভা এবং বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল ইউনিয়ন, পশ্চিম গোমদণ্ডী ইউনিয়ন, শাকপুরা ইউনিয়ন, সারোয়াতলী ইউনিয়ন, পোপাদিয়া ইউনিয়ন, চরণদ্বীপ ইউনিয়ন, আমুচিয়া ইউনিয়ন ও আহলা করলডেঙ্গা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। (উভয়ই পূর্বের নির্ধারিত এলাকা অনুযায়ী)

বিজ্ঞপ্তি অনুসারে— গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৯-এর দফা (১)-এর উপদফা (গ) এবং জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১-এর ধারা ৮-এর উপধারা (১)(খ) অনুযায়ী জাতীয় সংসদ সদস্যের নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এলাকাভিত্তিক নির্বাচনী এলাকাগুলোর সীমানা উপরোক্ত আইনের ধারা ৬-এর উপধারা (২) অনুসারে প্রশাসনিক সুবিধা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং জনসংখ্যার বাস্তব বিভাজনকে যতদূর সম্ভব বিবেচনায় রেখে প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে ধারা ৬-এর উপধারা (৩) অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন এতদসঙ্গে একটি প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে এবং তালিকাটি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে লিখিত দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত আহ্বান করা হলো।

সীমানা পুনঃনির্ধারণে যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে- পার্বত্য এলাকার তিন জেলার তিনটি আসন অপরিবর্তনীয় রাখা; দুই আসন বিশিষ্ট জেলার আসন সংখ্যা অপরিবর্তীত রাখা। কারণ ভোটার/জনসংখ্যার অনুপাতে আসন বৃদ্ধি করলে অস্বাভাবিকভাবে হ্রাস (জেলাভিত্তিক ভোটারের জাতীয় গড়ের তুলনায়) পায়।

আবার দুটি আসনকে একটি আসনে হ্রাস করলে ভোটার সংখ্যা গড়ের তুলনায় অনেক বেড়ে যায়; তিন আসন বিশিষ্ট জেলার আসন সংখ্যা অপরিবর্তিত রাখা। আসন হ্রাস/বৃদ্ধিতে ভোটার/জনসংখ্যার অনুপাতে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে পড়ে; যেসকল আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণের জন্য কোনো আবেদন দাখিল হয়নি, সে আসনগুলো অপরিবর্তীত রাখা; প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার গণ্যে উপজেলা/থানা ইউনিটকে যতদূর সম্ভব অখন্ড রাখা; জেলার মধ্যকার আসনের ভোটার সংখ্যা সবোর্চ্চ ৩০ শতাংশ ব্যবধানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা; যতদূর সম্ভব, প্রশাসনিক ও নির্বাচনী সুব্যবস্থার বিষয় বিবেচনায় রেখে উপজেলা, সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ডের অখণ্ডতা বজায় রাখা; ইউনিয়ন, সিটি কপোরেশনের ওয়ার্ড ও পৌরসভার একাধিক সংসদীয় আসনের মধ্যে বিভাজন না করা; সিটি করপোরেশন এলাকার জনসংখ্যা, ভোটার সংখ্যা, প্রশাসনিক পরিধি বিবেচনায় নির্বাচনী এলাকা পুনঃবিন্যাস করা; যতদূর সম্ভব, সীমানা পুনঃনির্ধারণকালে সংশ্লিষ্ট জনগণের সেবা বিষয়ক সুবিধা/অসুবিধার বিষয় বিবেচনা করা; যতদূর সম্ভব, ভৌগলিক বৈশিষ্ট্য (যথা-নদী) ও যোগাযোগ ব্যবস্থা (যথা-রাস্তাঘাট) তথা জনগণের যাতায়াত ব্যবস্থা সুবিধা ও অসুবিধা বিবেচনা করা; এবং যেসকল প্রশাসনিক এলাকা নতুন সৃষ্টি হয়েছে বা সম্প্রসারণ হয়েছে বা বিলুপ্ত হয়েছে তা অন্তর্ভুক্ত/কর্তন করা এবং পরিবর্তিত নাম সংশোধন করা।

কোনো সংক্ষুদ্ধ বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আগামী ১০ আগস্টের মধ্যে কোনো আসনের পুনঃনির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন বরাবর তার লিখিত দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত পেশ করতে পারবেন। তবে দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত এই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত কোনো আসনের সীমানা সংক্রান্ত হতে হবে এবং দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত সংক্রান্ত দরখাস্ত পাঁচ প্রন্থ দাখিল করতে হবে। নির্ধারিত তারিখের পর কোনো দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত সংক্রান্ত দরখাস্ত গ্রহণ করা হবে না।

এর আগে বিকেলে মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, নির্বাচন কমিশনের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষায়িত কারিগরি কমিটি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনরায় নির্ধারণে সুপারিশ জমা দিয়েছে। সংসদীয় ৩০০ আসনের মধ্যে ৩৯টির সীমানা পরিবর্তন হচ্ছে। গাজীপুরে একটি আসন বাড়ছে এবং বাগেরহাটে একটি আসন কমছে।

যে ৩৯ টি আসনে পরিবর্তন এসেছে -পঞ্চগড় -১, ২, রংপুর-৩, সিরাজগঞ্জ -১, ২ সাতক্ষীরা-৩, ৪ শরিয়তপুর- ২, ৩ ঢাকা-২, ৩, ৭, ১০, ১৪, ১৯, গাজীপুর-১, ২, ৩, ৫, ৬ নারায়ণগঞ্জ-৩, ৪, ৫, সিলেট- ১, ৩ ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ২, ৩ কুমিল্লা ১, ২, ১০, ১১, নোয়াখালী ১, ২, ৪, ৫ চট্টগ্রাম-৭, ৮ ও বাগেরহাট -২ , ৩ আসনের সীমানা পরিবর্তন করা হয়েছে।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top