চট্টগ্রাম বন্দরে ভেঙে ফেলা হচ্ছে সব ধরণের সিন্ডিকেট

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরে সকল ধরণের সিন্ডিকেট, মনোপলি ভেঙে ব্যবসার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। বন্দরের শহীদ মুন্সী ফজলুর রহমান মিলনায়তনে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ইতিপূর্বে প্রদত্ত ২৩টি শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, যার সুফল বন্দর ব্যবহারকারীগণ পেতে শুরু করেছেন।

একটি জাতীয় দৈনিকের সাম্প্রতিক রিপোর্টের রেফারেন্স টেনে বন্দর চেয়ারম্যান আরও বলেন, সিন্ডিকেট প্রথা বিলুপ্ত করতে সফল হওয়ায় বন্দরের ২৫% পরিবহন খরচ হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া বন্দর পরিচালনায় শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এতে চট্টগ্রাম বন্দর এবং চট্টগ্রাম শহরে যানজট উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে।

এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বন্দরের চেয়ারম্যান বলেন, নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব আন্তর্জাতিক অপারেটর ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি বা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কাজ করছে। এই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে বছরখানেকের মতো সময় লাগবে। এই অন্তর্বর্তী সময়ে পরিচালনার জন্য প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হবে। দরপত্র যাতে প্রতিযোগিতামূলক হয়, সে জন্য এ–সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপনের কিছু শর্ত সংশোধন করা হচ্ছে। সংশোধন শেষে দরপত্র আহ্বান করা হবে।

এছাড়া মতবিনিময় সভায় বন্দরের নতুন প্রকল্পগুলো নিয়েও কথা বলেন বন্দর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, গত ১৬ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দরে ৪৫.৫ হাজার কনটেইনার স্থিতি ছিল। এ সময় চট্টগ্রাম বন্দরে মোট ধারণ ক্ষমতার প্রায় ৮৫ শতাংশ এলাকাজুড়ে কনটেইনার ছিল। তবে গত তিন মাসে পদ্ধতিগত উদ্ভাবনের মাধ্যমে তা ৩৪ হাজারে নামিয়ে আনা হয়। আগে জাহাজের অপেক্ষমাণ সময় ছিল ৬ থেকে ৮ দিন। বর্তমানে অপেক্ষমাণ সময় এক বা দুইদিনে নামিয়ে আনা হয়েছে।

পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দরে আধুনিক পোর্ট ইকোসিস্টেমে, পোর্ট কমিউনিটি সিস্টেম প্রবর্তন, ডিজিটালাইজেশন এবং আধুনিকীকরণের মাধ্যমে একটি বিশ্বমানের বন্দরে পরিণত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান বন্দর চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, সরকারি পত্র ও নথি আদান-প্রদান সহজে ও দ্রুত সম্পাদনের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের শতকরা ৮০ ভাগ কাজ ডি-নথি পদ্ধতিতে সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে অবস্থানরত জাহাজের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য ১২৮ জন ওয়াচম্যান নিবন্ধন করার লক্ষ্যে প্রার্থীদের শারীরিক বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। বহির্নোঙ্গরে অবস্থানরত জাহাজের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য পণ্য সরবরাহকারী লাইফ বোটগুলোতে নির্দিষ্ট (হলুদ) রং করাসহ এআইএস এবং ট্র্যাকিং সিস্টেম সংযোগ করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

এছাড়া বন্দরের পতেঙ্গায় লালদিয়ার চরে লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটরের সঙ্গে চুক্তি, বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সঙ্গে নতুন শিপিং রুট চালুসহ নানান বিষয় তুলে ধরেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান।

চাটগাঁ নিউজ/এফএস

Scroll to Top