চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবেশমুখে অবরোধ কাল

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখী সকল প্রবেশপথে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) ডাকা অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সতর্ক অবস্থায় আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নগর পুলিশের কর্মকর্তারা বলেছেন, বন্দরের কাজে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলে ছাড় দেওয়া হবে না।

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ (এনসিটি) বিভিন্ন স্থাপনা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে স্কপ বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অবরোধের ডাক দিয়েছে।

স্কপের চট্টগ্রাম জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক রিজওয়ানুর রহমান খান জানান, নগরীর বড়পোল, ইসহাক ডিপো সংলগ্ন টোল প্লাজা এবং সল্টগোলা ক্রসিংয়ে সীম্যান্স হোস্টেলের সামনে অবরোধের সমর্থনে শ্রমিক-কর্মচারীরা অবস্থান নেবেন। সেখানে শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশ হবে।

এদিকে স্কপভুক্ত শ্রমিক সংগঠনগুলোর পাশাপাশি বাম গণতান্ত্রিক জোট এবং পরিবহণ শ্রমিকরাও একাত্মতা প্রকাশ করে অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি) চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি তপন দত্ত। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘পরিবহণ শ্রমিক, যারা মূলত বন্দরের পণ্য আনা-নেওয়া করে, তারা অবরোধ চলাকালীন যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখবে বলে আমাদের জানিয়েছে। তারা সিম্যান্স হোস্টেলের সামনে অবস্থান নেবে। এছাড়াও ৪৭টি পরিবহণ শ্রমিক সংগঠন আমাদের কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। তাদের প্রতিনিধিরা আমাদের সঙ্গে থাকবেন। বাম গণতান্ত্রিক জোট শুরু থেকেই আমাদের সঙ্গে আছে।’

বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা চট্টগ্রাম জেলা সিপিবির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে অবরোধ কর্মসূচিতে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছি। আমরা কর্মসূচিতেও অংশ নেব। সিপিবি, বাসদসহ জোটভুক্ত সকল রাজনৈতিক, শ্রমিক, ছাত্র, যুব সংগঠনের নেতাকর্মীরা অবরোধের জন্য ঘোষিত পয়েন্টগুলোতে অংশ নেবে। ইন্টেরিম সরকারের কোনো অধিকার নেই আমাদের জাতীয় সম্পদ এভাবে বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার। আমরা সর্বস্তরের জনতাকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘অবরোধ কর্মসূচি নিয়ে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় আছি। আমাদের সর্বোচ্চ পরিমাণে ফোর্স মোতায়েন থাকবে। বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা থাকবে। উনারা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করলে আমরা বরং সহযোগিতা দেব। কিন্তু বন্দরের কাজে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’

গত ১৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া চরে টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ৩৩ বছরের চুক্তি করেছে সরকার। এই মেয়াদ আরও ১৫ বছর বাড়ানোর সুযোগ আছে চুক্তিতে। একইদিন কেরাণীগঞ্জের পানগাঁও নৌ-টার্মিনাল ২২ বছর মেয়াদে পরিচালনার জন্য সুইজারল্যান্ডের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এছাড়া, বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালও (এনসিটি) বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত আছে সরকারের।

বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়া বন্ধে গত ২২ নভেম্বর চট্টগ্রামে এক শ্রমিক কনভেনশন থেকে বন্দরে প্রবেশমুখী সকল সড়কে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে স্কপ।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top