সিপ্লাস ডেস্ক: বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম শহরে কর্মরত ফটিকছড়িবাসী সাংবাদিকদের সংগঠন ‘ফটিকছড়ি সাংবাদিক পরিষদ-চট্টগ্রাম’র বর্ণাঢ্য অভিষেক অনুষ্ঠান হয়েছে। এ উপলক্ষে আয়োজন করা হয় ফটিকছড়িবাসীর মিলনমেলারও। গান, কথামালাসহ নানা আয়োজনের সঙ্গে ছিল চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানও।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়ির ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এ অনুষ্ঠানে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের মিলনমেলা হয়। রাজনীতি, সংস্কৃতি, প্রশাসনসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার সর্বস্তরের মানুষের সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠে অনুষ্ঠানস্থল।
মিলনমেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম।
বিভিন্ন শ্রেণি, পেশা, ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে বিশিষ্ট ফটিকছড়িবাসীসহ প্রশাসন ও চট্টগ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠে অনুষ্ঠানস্থল।
ফটিকছড়িবাসীর পদচারণায় এ অনুষ্ঠান উৎসবে পরিণত হয়। নিজেদের আঞ্চলিক ভাষায় মন খুলে কথা বলেন পরস্পরের সঙ্গে; এ যেন চট্টগ্রামের বুকে একখন্ড ফটিকছড়ি।
সরকারের উর্ধতন কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ী, প্রকৌশলী, বিচারক, আইনজীবী, চিকিৎসক, বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা নানান পেশাজীবী অংশগ্রহণে ফটিকছড়িবাসীর মিলনমেলা হয়ে উঠে অনন্য আয়োজন।
সংঠনের সভাপতি মহসীন কাজী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফারুক।
উপস্থিত থেকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন, সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপি, খাদিজাতুল আনোয়ার সনি এমপি, সাবেক সংসদ সদস্য মজাহারুল হক শাহ চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দিন মাইজভাণ্ডারী, শিল্পউদ্যোক্তা নাদের খান, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আসলাম খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম, গণপূর্ত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবদুল কাদের, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রখৌশলী রফিকুল ইসলাম মাণিক, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি সালাউদ্দিন মো: রেজা, সিইউজে সভাপতি তপন চক্রবর্তী, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হারুন, ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান হোসাইন মো: আবু তৈয়ব, আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী, প্রফেসর ড. মনজুরুল কিবারয়া, বিশিষ্ট আইনজীবী এসএম ফরমানুল ইসলাম, আইইবির সম্পাদক প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহজাহান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন মুহুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাদিবা নূর, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ছালাম উল্লাহ চৌধুরী শাহীন, জেবুন্নাহার মুক্তা, মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্টের সচিব এওয়াইএম জাফর, গবেষক শাহেদ আলী চৌধুরী প্রমুখ।
উদ্বোধনী বক্তব্যে এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম বলেন, ফটিকছড়ির সন্তানরা প্রতিটি পেশায় ভূমিকা রাখছেন-নিজেদের মেধা যোগ্যতা দিয়ে। সাংবাদিকতা পেশায়ও সুদীর্ঘকাল থেকে দেশ বিদেশে ভূমিকা রেখে পেশার মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখে চলেছেন তাঁরা। তাদের সংগঠন যে আয়োজন করেছে তা ফটিকছড়িবাসীর হৃদয়ে গেঁথে থাকবে। এটি স্মরণীয় থাকার মতো একটি আয়োজন। তিনি বলেন, ফটিকছড়ি ইতিহাস, ঐতিহ্য, আধ্যাত্মকতা এবং ভাষাগত স্বাতন্ত্র সমৃদ্ধ ঐতিহ্যবাহী একটি উপজেলা। এ জনপদ দেশ বিদেশে খ্যাতিমান অনেকের শিখড়।
তিনি আরও বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিতে এবং বর্তমান সরকারের বাস্তবায়নাধীন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে দেশরত্ন শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ফটিকছড়িতে দুইটি পৌরসভা, ফায়ারসার্ভিস, ভুজপুর থানা, রাবার ড্যাম, আটটি ব্রিজ, মাইজভাণ্ডার-নাজিরহাট সড়ক, পেলাগাজী-হেঁয়াকো সড়ক, নাজিরহাট-সুয়াবিল-কাজিরহাট সড়ক, মিরসরাই-নারায়নহাট সড়ক, স্থলবন্দর, বিভিন্ন রাস্তা নির্মাণসহ অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তিনি শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকলকে কাজ করার আহবান জানান।
সভাপতি মহসীন কাজী বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করতে ফটিকছড়ি সাংবাদিক পরিষদ-চট্টগ্রাম ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। এবার মিলনমেলার মধ্য দিয়ে ফটিকছড়িবাসীর মধ্যে মেলবন্ধন সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মিলনমেলার এই ধারা আগামীতেও অব্যাহত রাখা হবে। পাশাপাশি ফটিকছড়ির জন্য যাঁদের অবদান রয়েছে তাঁদেরও জাতির সামনে তুলে ধরা হবে। যাতে নতুন প্রজন্ম তাঁদের কর্মকীর্তি সম্পর্কে জানতে পারেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলার গজল সম্রাট খ্যাত জামাল হাসান, লোক সঙ্গীতের বরপুত্র খ্যাত শিমুল শীল, মাইজভাণ্ডারী গানের জনপ্রিয় শিল্পী জিয়াউদ্দিন বাদশা, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, মোস্তফা মোহাম্মদ এমরান, শিমুল আকতার ও ইচ্ছে বড়ুয়া।
অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে প্রকাশিত ‘শিখড়’নামের ১২০ পৃষ্ঠার প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন উপস্থিত বিশিষ্টজনরা।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ফটিকছড়ি কৃতি সন্তানদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়।