নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম নগরীর ৩৫টি ওয়ার্ডে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চট্টগ্রাম মহানগর শাখা। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র সভাপতি এরশাদ উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক নাজিমুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এসব কমিটি গঠন ও অনুমোদন দেয়া হয়।
তবে ওয়ার্ড পর্যায়ে সদ্য গঠিত কমিটি নিয়ে বঞ্চিতদের মাঝে হতাশা ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে পদবঞ্চিতরা মানববন্ধন ও সমাবেশ করে নিজেদের হতাশা ব্যক্ত করতে দেখা গেছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (৩ জুন) চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির উদ্যোগে নগরীর ৪১ ওয়ার্ড ও ২টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডসহ মোট ৪৩ ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৫টি ওয়ার্ডে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। প্রতি ওয়ার্ড কমিটি করা হয়েছে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট।
কমিটি ঘোষণার পর থেকে ওয়ার্ডগুলোতে পদপ্রাপ্তদের মধ্যে চলছে আনন্দ উচ্ছ্বাস। আবার অন্যদিকে পদবঞ্চিতদের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা ও ক্ষোভ।
জানা গেছে, পদবঞ্চিত বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী ও তাদের সমর্থকরা আজ বুধবার সকাল থেকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মানববন্ধন,সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভ করে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
আগ্রাবাদ মোড়ে মোস্তফা গার্মেন্টেসের সামনে ২৮নং ওয়ার্ড বিএনপির পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা মিছিল করেছেন। এসময় ২৮ নং আগ্রাবাদ ওয়ার্ড বিএনপির পদবঞ্চিত নেতা কবির আহমদ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ বিএনপির রাজনীতি করে আসছি। দলের জন্য আমাদের ত্যাগ,তিতীক্ষা রয়েছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের জেল, জুলুম, নির্যাতন সহ্য করেছি। কিন্তু কমিটি গঠনের সময় আমাদেরকে বঞ্চিত করা হয়েছে। যারা আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করেছে তাদেরকেই এখন কমিটিতে রাখা হয়েছে। এ কমিটি পকেট কমিটি। আমরা নগর বিএনপি নেতৃবৃন্দের কাছে এ কমিটি পুনর্বিবেচনার দাবি জানাই।
পাঁচলাইশ ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আবু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দলের জন্য আমরা নিজেদেরকে উৎসর্গ করেছি। বিগত আওয়ামী লীগের আমলে অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছি। এখন তদবির বাণিজ্য করে কমিটি করা হয়েছে। কমিটিতে ত্যাগী নেতারা স্থান পাননি। এ কমিটির মাধ্যমে সঠিক নেতৃত্ব আসেনি।
বায়েজিদ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের জসিম বলেন, এ অবৈধ কমিটি আমরা মানিনা । এখানে হাইব্রিড ও আওয়ামী লীগের লোক রয়েছে।
তবে নগর বিএনপির সভাপতি মো. এরশাদ উল্লাহ বলেন— সংগঠনের গতিশীলতা ফেরাতে এবং তৃণমূলে দলকে শক্তিশালী করতে আমরা নতুন নেতৃত্বকে সামনে এনেছি। যারা আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন, ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাদের মূল্যায়ন করা হয়েছে।
পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ,সভা-সমাবেশ প্রসঙ্গে এরশাদ উল্লাহ বলেন— ক্ষোভ-বিক্ষোভ এটা রাজনৈতিক সৌন্দর্য। পদবঞ্চিতরা একটু মনখারাপ করবেন এটা স্বাভাবিক। কমিটিতে সবাই স্থান পাবেন না। যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্বকে কমিটিকে আনা হয়েছে।
গত বছরের ৩ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নগরের সাংগঠনিক ১৫টি থানা ও ৪৩টি ওয়ার্ড কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বিলুপ্ত ঘোষণা করে নগর বিএনপি।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি/জেএইচ