চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন নিয়ে জটিলতা কাটছে না। এবার চেম্বার নির্বাচন নিয়ে আপিল বিভাগের আদেশ অবমাননার অভিযোগ এনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলের প্যানেল লিডার ও মামলার বাদীকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ইউনাইটেড বিজনেস ফোরামের পরিচালক প্রার্থী আকতার পারভেজের পক্ষে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের এসএম নুরুল হক ও মোহাম্মদ বেলালকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়।
আকতার পারভেজের আইনজীবী মোহাম্মদ আব্দুল হাই নোটিশে বলেন, ‘৩০ অক্টোবর আপিল বিভাগ টাউন অ্যাসোসিয়েশন, ট্রেড গ্রুপের প্রতিনিধিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিবাদী করার নির্দেশনা দিলেও আপিল বিভাগের সেই আদেশ অমান্য করেছেন মোহাম্মদ বেলাল। রিটের বাদী মোহাম্মদ বেলালের এই বিলম্ব ও এড়িয়ে যাওয়ার আচরণ থেকে স্পষ্ট যে, তার উদ্দেশ্য ছিল অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে ব্যাহত করা। আরেক নোটিশ প্রাপক এসএম নুরুল হক চেম্বার নির্বাচন বানচাল করার অভিযোগ তুলে চট্টগ্রামে সভা-সমাবেশ করেছেন। এসএম নুরুল হক সমাবেশে দাবি করেছেন, নির্বাচন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বন্ধ করেছে। অথচ বাস্তবে তারাই একের পর এক মামলা করে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করেছেন।
এতে তাদের দুরভিসন্ধিমূলক উদ্দেশ্য আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।’ নোটিশে নুরুল হককে ক্ষমা চাওয়ার জন্যও বলা হয়।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম চেম্বার নির্বাচনে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের মধ্যে একটি হচ্ছে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ এবং অপরটি ইউনাইটেড বিজনেস ফোরাম। উচ্চ আদালতে চেম্বার নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা করেছেন মোহাম্মদ বেলাল। তিনি এসএম নুরুল হকের প্যানেলের সম্মিলিত ব্যবসায়ী ফোরাম থেকে প্রার্থী না হলেও তাদের পক্ষেই এই মামলা করেছেন। বিপরীতে ইউনাইটেড বিজনেস ফোরাম কোনো মামলা করেনি। তাছাড়া এবারের নির্বাচনে চট্টগ্রাম চেম্বারে টাউন অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আকতার পারভেজ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমদের নেতৃত্ব সুপ্রিমকোর্টের ফুল বেঞ্চ গত ৩০ অক্টোবর সর্বশেষ নির্দেশনায় চারটি ক্যাটাগরির সবগুলোতেই চট্টগ্রাম চেম্বার নির্বাচন স্থগিত করেছেন। একই সঙ্গে চেম্বার নির্বাচনে টাউন অ্যাসোসিয়েশন এবং ট্রেড গ্রুপ নিয়ে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে সেটি হাইকোর্টে নিষ্পত্তি করতে ১৪ দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন। সেই আদেশে বিবদমান ছয়টি পক্ষকে বিবাদী করতে বলা হয় আদেশ প্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে।
নোটিশে অভিযোগ করা হয়, নুরুল হক সমাবেশে দাবি করেছেন, নির্বাচন উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের অন্তর্বর্তী আদেশ অনুযায়ী হতে হবে। যেখানে শুধু টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রেড গ্রুপগুলোকে বাদ দিতে হবে। যদিও আপিল বিভাগ সরাসরি হাইকোর্টের আদেশ সংশোধন করে পুরো নির্বাচন স্থগিত করেছেন। যতক্ষণ রিট পিটিশন মামলায় জারি করা রুল নিষ্পত্তি না হয়। নুরুল হকের এই দাবি সরাসরি বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ; যা আদালত অবমাননা। এই বক্তব্য আদালতের কার্যক্রমকে অবমূল্যায়ন করেছে, বিশেষ করে আপিল বিভাগের নির্দেশনাকে।
আদালতের কার্যক্রমকে অবমূল্যায়ন করে দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করা, নিঃশর্ত ক্ষমা প্রকাশ এবং আপিল বিভাগের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়ে এই নোটিশ জারি করা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশপ্রাপ্ত মোহাম্মদ বেলাল বলেন, তারা আদালতের আদেশ অনুযায়ী কাজ করেছেন। আদালত অবমাননাকর কিছু করলে সেটা সংশ্লিষ্ট আদালত দেখবেন। প্রসঙ্গত, ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী গত ১ নভেম্বর চট্টগ্রাম চেম্বারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। উচ্চ আদালতে মামলার কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়।
চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন/এসএ






