চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: প্রতিবছরের ন্যায় এই বছরও পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিল বের করেছে শিয়া সম্প্রদায়।
আজ রোববার (৬ জুলাই) সকালে নগরীর সদরঘাটের ইমামবাড়া থেকে মিছিলটি বের হয়ে মিছিলটি নগরীর নিউমার্কেট, জিপিও, কোতোয়ালী মোড়, আলকরণ ঘুরে ইমামবাড়ায় ফিরে যায়।
এসময় ‘হায় হোসাইন, হায় হোসাইন’ ধ্বনিতে শোকের আবহ তৈরি হয় চারপাশে। একইসাথে মার্সিয়া ও শোকগীতি পড়তে পড়তে মাতম করতে থাকেন শোকাতুর শিয়ারা।
মিছিলে নেতৃত্ব দেন মাওলানা মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন। মিছিলটি কালীবাড়ি রোড হয়ে নিউমার্কেট পৌঁছালে সেখানে পথচারীদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন মাওলানা আমজাদ হোসাইন।
তিনি বলেন- ইসলামকে রক্ষা করতে গিয়ে নবীর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) পরিবার-পরিজন ও সঙ্গী-সাথী নিয়ে ৬১ হিজরীতে কারবালার প্রান্তে নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করে যে মহান আত্মত্যাগের নিদর্শন রেখে গেছেন সেই আত্মত্যাগ থেকে আমাদেরকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে নিজেদের মধ্যে কালি মাখামাখি, হানাহানি। পাশাপাশি বর্তমান বিশ্বে পবিত্র ধর্ম ইসলামকে কলঙ্কিত করার উদ্দেশ্যে যেসকল জঙ্গি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠি ইসলামের নামে মানুষ হত্যাসহ ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং সকল মানুষের কাছে সত্য দ্বীনকে সঠিকভাবে তুলে ধরতে হবে। তাহলেই ইমাম হোসাইন (আ.)-এর মহান ত্যাগ সার্থকতা লাভ করবে।
তিনি মুসলিম উম্মাহর ঐক্য প্রতিষ্ঠা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সকলের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের আহ্বান জানান।
এর আগে সকালে শত শত মানুষের ভিড়ে বিশাল মাসায়েব মজলিশ অনুষ্ঠিত হয় সদরঘাট হোসাইনিয়া ইমামবাড়াগাহে। মাসায়েব মজলিশে ইয়াজিদী বাহিনীর হাতে ইমাম হোসাইন (আ.) ও তার সঙ্গীদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের মর্মস্পর্শী বর্ণনা তুলে ধরেন পেশ ইমাম মাওলানা আমজাদ হোসেন।
এ সময় শত শত নারী-পুরুষের কান্না ও আর্তনাদে ভারী হয়ে ওঠে সদরঘাট ইমামবাড়াগাহের পরিবেশ। স্মরণ করা হয় কারবালায় ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনা। মাঝে মাঝে নারায়ে তাকবীর আল্লাহু ওয়াকবার, নারায়ে হায়দারি হাঁকে প্রকম্পিত হতে থাকে চারপাশ। পেশ ইমামের বক্তব্য শেষ হতে না হতেই হাত তুলে ‘লাব্বাইক ইয়া হোসাইন’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন সবাই।
এরপরই ‘আলাম’ ও ‘তাবুত’ সহকারে মার্সিয়া (শোকগীতি) পড়তে পড়তে জুলুস (শোক মিছিল) নিয়ে খালি পায়ে শত শত নারী পুরুষ শিশু কিশোর রাস্তায় নামেন। এ সময় তারা শোকাবহ কারবালার নানা ঘটনাবলি তাবুত (প্রতীকী কফিন), আলম (পতাকা), স্লোগান ও মাতমের মাধ্যমে তুলে ধরেন।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ