চট্টগ্রামে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রামে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী মো. জামালকে (৩৫) মৃত্যুদণ্ডের দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আজ বুধবার (৩ জুলাই) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ড. বেগম জেবুন্নেছা বেগম এ রায় দেন।

দুই বছর আগে মহানগরীর বাকলিয়া থানার বাস্তুহারা কলোনীতে স্ত্রী পারভীন আক্তারকে হত্যা করে স্বামী জামাল।

ফাঁসির রায়ে দণ্ডিত মো. জামাল কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার মুসাগারা এলাকার মৃত জোনাব আলীর ছেলে।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. আব্দুর রশীদ। তিনি বলেন-মামলায় মোট ১৪ জনের সাক্ষীর ভিত্তিতে স্ত্রী পারভিন আক্তারকে হত্যার অভিযোগ ৩০২ ধারায় সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামি জামাল উদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানামূলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ভিকটিম পারভীন আক্তারের সাথে বিয়ে হয় জনৈক মনা মিয়ার। বিয়ের তিন বছরের মাথায় তাদের বিচ্ছেদ হয়। পরে আসামি জামালের সাথে বিয়ে হয় পারভীন আক্তারের। ২০২২ সালের ১৭ জানুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে মুঠোফোনে ভিকটিমের বোন বেবী আক্তার খবর পান পারভীন মারা গেছেন।

পরে বেবী আক্তার মর্গে রাখা লাশে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। বিভিন্ন সময় জামাল তার স্ত্রী পারভীনকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। ঘটনার আগের দিন সকালেও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। প্রায়ই ঝগড়া হওয়ায় ওই বাসার মালিক তাদের বাসা ছেড়ে দিতে বলে।

ঘটনার দিন অর্থাৎ ১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাসার মালিক নতুন ভাড়াটিয়াকে বাসা দেখানোর জন্য গেলে দরজার বাইরে হুক লাগানো দেখতে পায়। ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় তিনি ঘরের ভিতরে ঢুকে দেখেন পারভীন আক্তারের মরদেহ চৌকির উপর কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে এবং তার স্বামী ঘরে নেই।

সঙ্গে সঙ্গে জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে থানা পুলিশকে জানায় বাড়ির মালিক। পরবর্তীতে ওই বছরের ১৮ জানুয়ারি পারভীন আক্তারের বোন বেবি আক্তার বাদী হয়ে জামালকে আসামি করে বাকলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের হওয়ার পর পুলিশ তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরে বিচার শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও আসামি পক্ষে ১ জন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এই রায় দেন।

চাটগাঁ নিউজ/এসআইএস

Scroll to Top