‘চট্টগ্রামে সাংবাদিকতার সংকট এবং বাংলাদেশের সংকট অভিন্ন’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: ‘চট্টগ্রামে সাংবাদিকতার সংকট এবং বাংলাদেশের সংকট অভিন্ন’ শীর্ষক একটা সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘স্টুডেন্টস এলায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে এতে বিষয়টির ওপর নিবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার শিক্ষক খ. আলী আর রাজী। উক্ত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ।

রোববার (৩ নভেম্বর) বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন মিলনায়তনে সেমিনারটির আয়োজন করা হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন পত্রিকার ব্যুরো প্রধানগণ, বুদ্ধিজীবী, সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দের পাশাপাশি এক ঝাঁক তরুণ সাংবাদিক।

নিবন্ধের উপর আলোচনা পর্বে কালের কণ্ঠের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান মুস্তফা নঈম বলেন, প্রথমত সাংবাদিক হিসেবে আমাদের অনেক পড়াশুনা করতে হবে। আমার সমাজকে জানতে হবে, রাষ্ট্র ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে হবে।

একাত্তর টিভির চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান সাইফুল ইসলাম শিল্পী বলেন, এখন বাজারে আছে কর্পোরেট সাংবাদিকতা, এজন্য সাংবাদিকতা উন্নয়নের দিকে না গিয়ে অবনতির দিকে যাচ্ছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান বলেন, পুরো দেশ থেকে চট্টগ্রামের বিষয় একটু আলাদা। কারণ, এখানে জাতিগত ইস্যু আছে, পাহাড় আছে, কক্সবাজারের ব্লু ইকোনমিক্যাল ইস্যু আছে। ঢাকা থেকে নিয়ন্ত্রিত সাংবাদিকতা চট্টগ্রামের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না। সাংবাদিকতা জানাশোনার বিষয় যেমন তেমনই কারিগরিক বিষয়।

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ শাহ নওয়াজ বলেন, সাংবাদিকতার মূল কাজ যা দেখেছেন যা ঘটেছে তার নির্মোহ বর্ণনা করা। সাংবাদিকরা সাংবাদিকতাও করবে, বিপ্লবও করবে। আমাদের দেশে একজন পুলিশকে দেখলে সালাম দেয়া হয় কিন্তু একজন সাংবাদিকের সাথে কেমন ব্যবহার করা হয় আপনারা জানেন। শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে কি করলেন। একদিকে তিনি আমার দেশ, চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি বন্ধ করলেন। অন্যদিকে কিছু টিভি চ্যানেল ও সংবাদ মাধ্যমকে বাহবা দিলেন যাদের মালিকরা তার মন্ত্রী ও সাংবাদিকরা তার অনুগত শ্রেণি। এগুলো করে তিনি ফ্যাসিবাদের চাষবাস শুরু করলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাংবাদিকতা করতে হলে আপনাকে এস্টাবলিশমেন্টের সাথে গাটছাট বাঁধলে হবে না। আপনাকে আলাদা থাকতে হবে। গাঁটছাট বাঁধলে আপনি তো সাংবাদিকতা করছেন না‌। আপনি তার পিআর হিসেবে কাজ করছেন।

সিনিয়র এই সাংবাদিক আরো বলেন, সাংবাদিকদের জন্য স্বীকৃতির ব্যবস্থা করতে হবে। লাইসেন্সের ব্যবস্থা করতে হবে। একজন আইনজীবীর আইনের ডিগ্রি না থাকলে সে আইনজীবী হতে পারে না, একজন শিক্ষককে শিক্ষক হতে হলে তাকে বিসিএস পাস করে শিক্ষা ক্যাডার হতে হয়, কিন্তু সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে এরকম কোনো নিয়ম নাই। তাদের কোনো নিবন্ধন, কোনো স্বীকৃতির দরকার হয় না। একজন এইট পাশ ব্যক্তিও সাংবাদিক হতে পারেন। তাই সাংবাদিকতাকে প্রাতিষ্ঠানিকরণের কোনো বিকল্প নেই। প্রাতিষ্ঠানিকিকরণ করতে পারলে আমাদের সাংবাদিকতা আরো সমৃদ্ধ হবে।

উক্ত সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন এন টিভির ব্যুরো চীফ শামসুল হক হায়দরী, বণিক বার্তার সিনিয়র রিপোর্টার সুজিত সাহা, সাংবাদিক স্বপন ইসলাম ও স্টুডেন্টস এলায়েন্স ফর ডেমোক্রেসির আহ্বায়ক জোবাইরুল হাসান আরিফ।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top