চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রাম ইপিজেডে ব্যবসায়ী মাহফুজুর রহমান (২৪) হত্যা মামলায় দুই আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলায় অপর এক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ নিশাদুজ্জামানের আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে এই সাজা দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বন্দর এলাকার তানভীর মোহাম্মদ সজীব (৩১) ও ইপিজেড এলাকার বাসিন্দা মো. হৃদয় (৩৭। আর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হলেন ইপিজেড এলাকার বাসিন্দা মো. আহসান ওরফে ইয়াছিন (৩৮)।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের অতিরিক্ত পিপি এম এ এম আজাদ বলেন, ইপিজেডে টাকার লোভে ওই ব্যবসায়ীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছিল। এ ঘটনার মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত করতে সক্ষম হওয়ায় আদালত সন্তুষ্ট হয়ে আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করত এই রায় দেন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানামূলে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে আদালতে আসামিদের ১৬৪ ধরায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী।
তথ্যমতে, ২০২০ সালে ২ মে সকালে ইপিজেড থানাধীন নিউমুরিং এলাকায় একটি মার্কেটের সিঁড়ির লোহার রেলিংয়ের সঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় মাহফুজুর রহমান নামে পুরাতন কাপড়ের ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত মাহফুজুর নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি থানার কমলনগর এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে। চট্টগ্রামে তাঁদের পরিবার ইপিজেড থানাধীন ব্যাংক কলোনিতে ভাড়া বাসায় থাকেন। ঘটনার পর ইপিজেড থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি দেখিয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা আব্দুর রহমান।
মামলার এজাহারে জানা গেছে, মাহফুজুর যে দোকান নিয়ে ব্যবসা করতেন, সেটার শাটার না থাকায় তিনি রাতে দোকানেই ঘুমাতেন। পরিবারের সদস্যরা দোকানে গিয়ে ওই ব্যবসায়ীকে দিনে ও রাতে গিয়ে খাবার দিয়ে আসতেন।
মামলা নথি থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ২ মে সকালে নগরের ইপিজেড থানার নিউমুরিং এলাকার শাহীন শাহ টাওয়ারের পাশে একটি ঘর থেকে মাহফুজ রহমানের লাশ উদ্ধার করা হয়। আসামিরা ভিকটিমের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় গুঁজে পালখিন ও স্কচটেপ মেরে মুখ আটকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দিতে ভিকটিমের গলায় নাইলনের রশি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে দোতলা ভবনের সিঁড়ির গ্রিলের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি আসামি বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ