নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে একদল তরুণ উদ্যোক্তা তৃতীয়বারের মতো আয়োজন করেছে দুই দিনব্যাপী ক্যাটেল এক্সপো। শিল্প হিসেবে সম্ভাবনাময় এ সেক্টরকে সবার কাছে ছড়িয়ে দিতে এ আয়োজন বলে জানান তারা।
শুক্রবার (৮ মার্চ) হালিশহর আবহনী মাঠে সরেজমিনে দেখা যায়, শত শত দর্শনার্থী ৫০ টাকায় টিকেট কেটে উপভোগ করছেন গরুর প্রদর্শনী। এক্সপোর পুরো মাঠ জুড়ে সারি সারি স্টল। প্রতিটি স্টলের গরুগুলোকে সাজানো হয়েছে বাহারিভাবে। এসব স্টলের শোভা পাচ্ছে চট্টগ্রামের ৫০টি ক্যাটেল ফার্মের নানা জাতের, নানা বর্ণের, আর নানা আকৃতি বিশাল বিশাল ১৫০টিরও বেশি গরু। বিশেষ করে ব্রাহমা, শাহীওয়াল, রেড সিন্ধি, হোলস্টাইন ক্রসসহ বিদেশি নানা জাতের গরুও। ফলে এক্সপোতে আসা দর্শনার্থীরাও বেশ আগ্রহ নিয়ে স্টলগুলো ঘুরে ঘুরে দেখছেন। এমন ব্যতিক্রমী আয়োজনে এসে অনেকেই মুঠোফোনে ছবি তুলছেন। অনেকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন শিশু সন্তানদেরও।
এর আগে বৃহস্পতিবার বেলুন উড়িয়ে দুই দিনব্যাপী এক্সপো’র উদ্বোধন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম, নাহার এগ্রোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ ব্রিডার ফার্মার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. রাকিবুর রহমান টুটুল, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স এসোসিয়েশনে সহসভাপতি নাজিব উল্লাহ, আলী আজম শিবলী, চট্টগ্রাম ক্যাটেল ফার্মার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি বোরহানুল হাসান চৌধুরী সালেহীন ও তৃতীয় ক্যাটেল এক্সপো’র আহ্বায়ক আকতার হোসেন জ্যাকি।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শিক্ষিত তরুণ সমাজ দেশ–বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে দেশের এগ্রো খাতের হাল ধরছেন, এটি ইতিবাচক দিক। প্রতি বছর কোরবানিতে এখন প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে গরু না আসলেও সমস্যা হচ্ছে না। দেশীয় ছোট বড় খামারিরা বিশাল সংখ্যক গরুর যোগান দিচ্ছে।
গরুর ফ্যাশন শো’ দেখে দর্শনার্থীদের অনেক উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। প্রদর্শনীতে অংশ নেয়া কয়েকজন তরুণ খামারি জানান, প্রদর্শনীতে কোনো গরু বিক্রি করা হচ্ছে না। শুধু গরু প্রদর্শন, প্রাকৃতিক উপায়ে কিভাবে ক্যাটেল ফার্ম করা যায় এবং প্রাকৃতিক পদ্ধতি ও প্রাকৃতিক খাদ্যে কিভাবে গরু মোটা–তাজা করা হয়, সেসব তথ্য–উপাত্ত জানানো হচ্ছে। এছাড়া, শিক্ষিত তরুণরা ক্যাটেল ফার্ম করে কিভাবে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে দেশের প্রাণিসম্পদের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে, সে সব বিষয় এক্সপোতে তুলে ধরা হয়েছে।
এক্সপোতে আসা তরুণ তরুণীরা বলেন, সারা বছর ধরে বিভিন্ন ধরণের মেলা হলেও ক্যাটেল এক্সপো বা গরুর মেলার বিষয়টি একেবারে ভিন্ন। এই মেলায় এসে নতুন অভিজ্ঞতা হলো। মেলায় বিভিন্ন জাতের অনেক বড় বড় গরু এসেছে। সবচেয়ে ভালো লেগেছে গরুর ফ্যাশন শো প্রতিযোগিতা।
নাহার এগ্রো গ্রুপের পরিচালক তানজীব জাওয়াদ রহমান বলেন, ‘আমরা এ মেলার মাধ্যমে দেখাতে চাই, বাংলাদেশে এ ইন্ডাস্ট্রিটা কীভাবে ডেভেলপ হচ্ছে। এবং আমরা তরুণ উদ্যোক্তারা কীভাবে কাজ করছি। এখানে দেখানো হচ্ছে কী করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে এ ষাঁড়গুলো পালন করা হচ্ছে।’
চট্টগ্রাম ক্যাটেল ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. আকতার হোসেন জ্যাকি বলেন, ‘হরেক রকম গরু নিয়ে তৃতীয়বারের মতো আমরা এ ক্যাটেল এক্সপো আয়োজন করেছি। আমাদের লক্ষ্য কীভাবে এ শিল্পকে আরও সামনে এগিয়ে নেওয়া যায়!’
চাটগাঁ নিউজ/এসএ