নিজস্ব প্রতিবেদক : অপরিকল্পিত নগরায়নের করাল থাবায় ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে মাঠ-খোলা প্রান্তর। যে কারণে মসজিদ কিংবা ব্যস্ত রাস্তার উপর আদায় করতে হয় ঈদের ও জানাযার নামাজ। এর ব্যতিক্রম নয় নগরীর মুরাদপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকা। এখানকার ৫০ হাজার বাসিন্দাদেরও একই দশা। ঈদের নামাজ কিংবা জানাযার নামাজ আদায় করতে হয় রাস্তা উপর। এতে রাস্তায় তৈরি হতো দীর্ঘ যানজট ও ভোগান্তি। তবে এই ভোগান্তি নিরসনে এগিয়ে এসেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী।
দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর মুরাদপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকায় আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের নিচে তৈরি হচ্ছে স্থায়ী ঈদগাহ। যেখানে প্রায় দুই হাজার মুসল্লি একত্রে জানাযা ও ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবেন। এতে মহাখুশি এলাকার মানুষ।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর মুরাদপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঈদগাহ ও জানাযার জন্য নির্ধারিত স্থানের দুই পাশে সাইন বোর্ড ও ব্যানার টাঙানো হয়েছে। চারপাশে বাউন্ডারি নির্মাণের জন্য লোহার পাত দিয়ে ব্যারিকেড দেয়া হচ্ছে। এরপর সেখানে লোহার নেট দিয়ে পুরো অংশ ঘেরাও দেওয়া হবে। ৩০০ ফুট জায়গাজুড়ে মেঝেতে ইট বিছানোর কাজ চলছে।
এলাকাবাসী জানান, আগে ঈদের নামাজ আদায় করতে রাস্তায় নামতে হতো তাদের। এমনকি কেউ মারা গেলে জানাযা পড়ার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে নামাজ আদায় করতে হতো। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হতো। লোকজন ভোগান্তির শিকার হতেন। কিন্তু চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ফ্লাইওভারে নিচে খোলা জায়গাটি নামাজ আদায়ের জন্য সুব্যবস্থা করে দেওয়ায় দীর্ঘদিনের সমস্যা দুর হয়েছে। মেয়রের এই অভিনব উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তারা।
চসিকের বাস্তবায়নে নান্দনিক ও দৃষ্টিনন্দন এমন একটি উদ্যোগের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মোবারক আলী।
তিনি বলেন, ফ্লাইওভারে নিচে নামাজের জন্য যে জায়গাটি নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানে প্রায় দুই হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, জায়গাটির চারপাশে ঘেরাও করে ভেতরে নান্দনিক ওয়াকওয়ে, ওজুখানা, বসার স্থান, ওয়াশরুম, স্টোররুম ও সিকিউরিটি রুম করা হবে।
ফ্লাইওভারের নিচে সড়কের মাঝখানে নামাজ আদায়ের কারণে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কাউন্সিলর জানান, পথচারী পারাপারের যাতে সমস্যা না হয় দুই জায়গায় জেব্রা ক্রসিং করা হবে। লোকজন খন্ডকালীন সময়ের জন্য জায়গাটা ব্যবহার করতে পারবেন।
চসিক সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর জেসমিন পারভিন জেসি মেয়রকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, মেয়র মহোদয় দুই কোটি টাকার এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের দীর্ঘদিনের সমস্যা থেকে মুক্তি দিচ্ছেন। আমরা এলাকাবাসি দীর্ঘদিন পরে একটা স্থায়ী ঈদগাহ আর জানাযার নামাজ পড়ার জায়গা পেলাম। মেয়র মহোদয়ের উদ্যোগের জন্য এলাকাবাসী মহাখুশি। ফলে জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমারও ভাল লাগছে
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী চাটগাঁ নিউজকে বলেন, মুরাদপুর-মোহাম্মদপুর এলাকায় এমন কোনো খোলামেলা এলাকা নেই, যেখানে কেউ মারা গেলে জানাযার নামাজ এবং ঈদের জামাত হবে। আমি চিন্তা করলাম এই সমস্যা সমাধানের জন্য ফ্লাইওভারের জায়গাটা কাজে লাগানো যায়। কমপক্ষে দুই হাজার মানুষ এই জায়গায় এক সাথে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে পারবে। কাজটা করতে পেরে আমারও ভাল লাগছে।
চাটগাঁ নিউজ/এসবিএন/এসএ