চট্টগ্রামে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ফিটনেসবিহীন যানবাহন, বাড়ছে দুর্ঘটনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন যানবাহনে সয়লাব চট্টগ্রামের সড়কগুলো। এসব যানবাহনের অধিকাংশের সিট ভাঙাচুড়া, কোনটির জানালার কাঁচ নেই, বৃষ্টি হলেই কোনটিতে ছাদ চুইয়ে পড়ছে পানি। তারওপর কোনো গাড়ির নিবন্ধন আছে, ফিটনেস সনদ নেই। আবার অনেক গাড়ির নিবন্ধনও নেই। বছরের পর বছর সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন হাজার হাজার যানবাহন।

ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন যানবাহন নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে রুটিন ওয়ার্ক অভিযান চালানো হলেও কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে এসব লক্কর ঝক্কর গাড়ির দৌরাত্ম্য।

এসব যানবাহনের কারণে সড়কে বাড়ছে চাপ। প্রতিনিয়ত ঘটছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। আবার সনদবিহীন যানবাহনগুলো থেকে সরকারও পাচ্ছে না কোনো রাজস্ব।

বিআরটিএর তথ্যমতে, বাস, মিনিবাস, ট্রাক, মিনি ট্রাক, প্রাইভেটকার, জিপ, কাভার্ড ভ্যান এবং সিএনজিচালিত যানবাহন মিলিয়ে চট্টগ্রামে চলাচলকারী মোট নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৩৮৯টি। এর মধ্যে নগরে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৪৪৩টি ও জেলায় ৬৯ হাজার ৯৪৬টি। আবার নিবন্ধিত যানবাহনের মধ্যে মহানগর এলাকায় ৪৬ হাজার ৭০৫টি ও জেলায় ২৯ হাজার ৬১৫টি যানবাহনের ফিটনেস সনদ নেই।

নগরে ১৫ হাজারের মতো সিএনজি অটোরিকশা ফিটনেস সনদ ছাড়াই চলছে। এছাড়া ২ হাজার ৯৯টি বাস, ৩৬ হাজার প্রাইভেট কার এবং প্রায় ৩০ হাজার ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের অধিকাংশের ফিটনেস সনদ নেই।

নগর ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়তই ট্রাফিক পুলিশের অভিযান চলছে। মামলা ও জরিমানাও করা হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরে মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ফিটনেস ও অননুমোদিত যানবাহন নিয়ন্ত্রণে জোরদার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে সভায় সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, ফিটনেসবিহীন ও অননুমোদিত যানবাহন অত্যাধিক হারে বেড়ে গেছে। মহানগর ও সংশ্লিষ্ট সকল থানার ট্রাফিক বিভাগকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করতে হবে। ফিটনেসবিহীন ও অননুমোদিত যানবাহনের বিরুদ্ধে আরও তৎপর হতে হবে। সড়কে ‍শৃঙ্খলা নিশ্চিতে তিনি সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় উপপুলিশ কমিশনারকে জোরদার ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে বিআরটিএ চট্টগ্রামের উপপরিচালক সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরী বলেন, বিআরটিএ’র পক্ষ থেকে অভিযান চলমান রয়েছে। প্রতিনিয়ত জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। আবার অভিযানে চিহ্নিত গাড়িগুলোকে সনদ সংগ্রহ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যানবাহন মালিক-শ্রমিকদের সাথে আলোচনা, প্রশিক্ষণ কর্মশালাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। তাদেরকে নানাভাবে উৎসাহিত করা হয়।

চাটগাঁ নিউজ/ইউডি/এসএ

Scroll to Top