নিজস্ব প্রতিবেদক: সাগরে নিম্নচাপের পর সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে চট্টগ্রামে। এর ফলে নগরীতে একদিকে যেমন তৈরী হয়েছে জলজট, তেমনি দেখা দিয়েছে যানজট। আর ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মজীবী থেকে শুরু করে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল থেকে এমনই চিত্র দেখা গেছে পুরো নগরজুড়ে। যেখানে সড়কের কোথাও কোথাও হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি। এই পানি ডিঙিয়ে কর্মজীবীদের যেতে হয়েছে অফিসে আর এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের যেতে হয়েছে পরীক্ষা কেন্দ্রে।
এ কারণে নগরীর সর্বত্র সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। এতে অফিসগামীরা পড়েছেন বিপাকে। রাস্তায় ভিজে ঘণ্টার পর দাঁড়িয়ে থেকে গাড়ি না পাওয়া, অতিরিক্ত ভাড়া দাবি আবার তীব্র যানজটে স্থবির যানবাহনে ক্ষোভ ঝেড়েছেন কেউ কেউ।
কথা হলে চকবাজারের বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুল মজিদ বলেন, এটা যেহেতু বাংলাদেশ এখানে এসব ভোগান্তি মাথায় নিয়ে আমাদের চলতে হবে। ঝড়-ঝাপটা যা থাকুক ভিজে পুড়ে আমাদের অফিসে যেতেই হবে।
তামান্না তন্বী নামের এইচএসসি পরীক্ষার্থী চাটগাঁ নিউজকে বলেন, আমার কেন্দ্র ওমেন কলেজে। জিইসিতে অনেক্ক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে গাড়ি পাইনি। অবশ্য গাড়ি পেলেও লাভ হতোনা। জিইসি থেকে খুলশি পুরো রাস্তায় জ্যাম। তাই হেঁটে কেন্দ্রে যাচ্ছি।
এদিকে পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কয়েকটা ছবি পোস্ট করে ড. শফিকুল ইসলাম নামে এক শিক্ষক ফেসবুকে লিখছেন— ‘পাবলিক পরীক্ষাগুলো এই বর্ষাকালে না রাখায় উত্তম। এতে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি কম হবে’।
সরেজমিনে দেখা গেছে — নগরীর ২নং গেট, মুরাদপুর, জিইসি, আগ্রাবাদ, চকবাজার, জামালখান মূলত যানজটে স্থবির। একদিকে পানি অন্যদিকে যানজট মাড়িয়ে যারা গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন তারা ফেসবুক তাদের ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরে আক্ষেপ ঝেড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভোগান্তির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাড়তি ভাড়া নিয়েছেন বিভিন্ন গাড়িচালকরা। বিশেষ করে সিএনজি চালিত অটোরিকশা আর রিকশাচালকরা আদায় করছেন তাদের ইচ্ছেমতো ভাড়া। আর অন্যান্য পরিবহন উঠানামা ১০ টাকা মানদণ্ডে কেবল অল্প দূরত্বে গিয়ে যানজটের কারণ দেখিয়ে যাত্রী নামিয়ে দিয়েছেন।
জানতে চাইলে সিএনজিচালক সিরাজ মিয়া চাটগাঁ নিউজকে জানান, সকাল থেকে ভাড়া মারতে পারেননি পানির জন্য। আর যাত্রীর তুলনায় গাড়ি কম থাকায় তারা যা ভাড়া বলছেন তাতেই রাজি হয়ে গাড়িতে উঠে পড়ছেন যাত্রীরা।
এদিকে আবহাওয়া নিয়ে সুখবর দিতে পারেনি পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস। বরং এই বৃষ্টিপাত আরও ২-৩ দিন থাকার আভাস তাদের।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মাহমুদুল আলম বলেন, চট্টগ্রামে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫৬ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টি আরও দুয়েকদিন থাকতে পারে। তবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কমবে।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ