নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির এমন অনেক সদস্য রয়েছেন যারা আইন পেশায় আছেন বা থাকবেন- এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে চেম্বার বরাদ্দ নিয়েছিলেন। তবে তারা চেম্বারগুলো ব্যবহার না করে অন্যদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ আইনজীবীরা।
অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রাম আদালত পাড়ায় বছরের পর বছর প্র্যাকটিস করেও অনেক পেশাদার আইনজীবী চেম্বার পাচ্ছেন না। চেম্বার বরাদ্দ নিয়ে আইনজীবী সমিতির বিগত কমিটিগুলো স্বজনপ্রীতি, ব্যক্তিতন্ত্র, স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অনিয়ম করেছেন। এ অনিয়মের কারণে অনেক পেশাদার আইনজীবী যোগ্যতা, দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব থাকার পরও চেম্বার বঞ্চিত রয়েছেন। তবে বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেসব চেম্বার বঞ্চিত আইনজীবীরা এমন অচলায়তনের প্রতিকার চান।
বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম জজ আদালতের আইনজীবী সিদ্ধার্থ শঙ্কর রক্ষিত বলেন, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির চেম্বার নিয়ে অনেকেই চেম্বার ভাড়ায় লাগিয়েছেন। অন্যদিকে প্র্যাকটিশনার আইনজীবীরা চেম্বার পাচ্ছেন না। অনেক আইনজীবী বারের সদস্য হয়ে এখন অন্য পেশায় নিয়োজিত আছেন। আইন পেশায় নেই, তবে বারের সদস্য হয়ে তারা সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন।
জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, গত ২ মার্চ চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির এডহক কমিটির পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট একেএম মকবুল কাদের চৌধুরী স্বাক্ষরিত জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, “চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির যেসকল সদস্য সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা, অর্থ বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি মালিকাধীন প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পূর্ণকালীন বা খন্ডকালীন চাকরিতে নিয়োজিত থেকে সমিতির সদস্যপদ বহাল রেখেছেন। তাদেরকে আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে সদস্য স্থগিতকরণের জন্য নির্ধারিত ফরমে আবেদনের অনুরোধ করা যাচ্ছে। উক্ত সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পর তাদেরকে সমিতি গঠনতন্ত্রের বিধি মোতাবেক সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির এডহক কমিটির আহবায়ক অ্যাডভোকেট একেএম মকবুল কাদের চৌধুরী বলেন, যেসব আইনজীবীরা সমিতির কাছ থেকে চেম্বার বরাদ্দ নিয়ে নিজেরা ব্যবহার না করে তা অন্যের কাছে ভাড়া দিয়েছেন। তাদের ব্যাপারে তদন্ত শুরু হয়েছে। তাদেরকে চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে। আইনজীবী সমিতির অপেশাদার সদস্যদের ব্যাপারেও আমরা সদস্য স্থগিতকরণের অনুরোধ জানিয়েছি। যারা আবেদন করেছেন বা করেননি তাদের ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, যারা চেম্বার নিজেরা ব্যবহার না করে অন্যদেরকে ভাড়া দিয়েছেন তাদেরকে সমিতির পক্ষ থেকে নোটিশে অবগত করতে হবে। সমিতির গঠনতন্ত্র মেনে আইনজীবীরা সমিতির সদস্য হয়েছেন, চেম্বার বরাদ্দ পেয়েছেন।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি/এসএ