বাঁশখালী প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১২ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনাগুলো ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সূত্রপাত বাঁশখালীর বাহারছড়া ইউনিয়নের মোশাররফ আলী মিয়ার বাজার এলাকায়। রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় পুলিশ।
তবে এর আগে স্থানীয় বাহারছড়া ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ওপর চড়াও হন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের ধাওয়া খেয়ে পুলিশ সদস্যরা উপকূলীয় জেনারেল হাসপাতালে আশ্রয় নেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের অভিযোগ, গতকাল বিকেলে পশ্চিম বাঁশখালী দারুল ইসলাহ দাখিল মাদ্রাসা মসজিদে ছাত্রশিবিরের একটি বৈঠকে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা হামলা চালালে ঘটনার সূত্রপাত হয়। তবে বিএনপির দাবি, ছাত্রশিবিরের ওই বৈঠকে বিএনপি ও তারেক রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করায় ছাত্রদল প্রতিবাদ করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, বিকেলের দুই পক্ষের মারামারিতে ছাত্রশিবির ও জামায়াতের তিনজন নেতা-কর্মী আহত হন। পরে রাতে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা এ বিষয়ে মীমাংসা করার জন্য স্থানীয় মোশাররফ আলী হাটে বৈঠকে বসেন। সেখানে আবারও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। রাত ১১টা পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা চলে।
সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের সহধর্মবিষয়ক সম্পাদক নয়নমণি এবং স্থানীয় ছাত্রদল কর্মী মো. তায়েব, এনামুল হক ও তানভীর হাসান এবং ছাত্রশিবিরের বাঁশখালী উত্তর শাখার সেক্রেটারি আজগর হোসাইন, জামায়াত কর্মী মো. রাকিব রয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে জামায়াত কর্মী রাকিবকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অন্যরা স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ঘটনার খবর পেয়ে শুরুতে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে চারজন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে যান। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত সাড়ে সাড়ে ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানতে চাইলে বাহারছড়া ইউনিয়ন জামায়াতের আমির হাসান আজাদ বলেন, মাদ্রাসা ছুটির পর বিকেলে পাশের মসজিদে পবিত্র কোরআন ক্লাসের আয়োজন করেছিল শিবির। সেখানে ছাত্রদল হামলা করে রাকিব নামের আমাদের একজন কর্মীকে আহত করেছেন। রাতে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য গেলে সেখানেও আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে আরও সাত থেকে আটজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
বাঁশখালী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক লোকমান আহমদ বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি, শিবিরের বৈঠকে বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। জামায়াত-শিবিরের হামলায় আমাদের চার থেকে পাঁচজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।’
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
চাটগাঁ নিউজ/জসিম/জেএইচ