চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও আজ শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে হালকা থেকে মাঝারি টানা বৃষ্টির কবলে পড়েছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। এতে নগরীতে জলাবদ্ধতাসহ পাহাড়ধসের আশংকা দেখা দিয়েছে।
এদিকে শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামে বিকেল তিনটা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় ১১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যেখানে বেলা ১২টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানায় পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস। পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও তার আশপাশের অঞ্চলগুলোতে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাসও দেওয়া হয়েছে। নগরীতে বৃষ্টি বাড়ায় নিচু এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।
পতেঙ্গা আবহাওয়ার অধিদফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতেও বলা হয়, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকা ও তার আশপাশে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সতর্ক সংকেতের প্রভাবে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত চট্টগ্রামের কিছু কিছু এলাকায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে। ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম নগরী বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ধসের শঙ্কা আছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা আবদুল বারেক বলেন, শুক্রবার বিকেল তিনটা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেল থেকে ভারি বর্ষণের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। মূলত শুক্রবার সকাল ৯টার পর থেকে বৃষ্টি বেড়েছে। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে। তাই চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে পাহাড়ধসের শংকায় নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোয় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয়দের সতর্ক করা হচ্ছে। পাহাড়ের বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে।
পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির হিসেবে চট্টগ্রাম নগরের ২৬টি পাহাড়ে বর্তমানে ৬ হাজার ৫৫৮টি ঝুঁকিপূর্ণ বসতি রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বসতি রয়েছে নগরীর কাট্টলী ভূমি সার্কেলে। আকবরশাহ থানাধীন ১, ২ ও ৩ নম্বর ঝিলসংলগ্ন পাহাড়গুলো এ সার্কেলের অন্তর্ভুক্ত। এখানেই বেশি পরিবারের বসবাস। কিন্তু পাহাড়ধসের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই পরিবারগুলো ওখানে বসবাস করছে দীর্ঘদিন ধরে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ বছরে চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে তিনশ’রও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ২০০৭ সালের ১১ জুন পাহাড়ধসে চট্টগ্রাম নগরীতে ১২৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এ ঘটনায় পাহাড়ে অবৈধ বসতি, ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস এবং প্রাণহানির ঘটনা নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে প্রায় প্রতিবছরই পাহাড়ধসে নগরী ও জেলায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ ২০২২ সালে নগরীর আকবর শাহ এলাকায় পাহাড়ধসে একই পরিবারের দু’জনের মৃত্যু হয়।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ